করোনা যোদ্ধা মেয়র টিটুর জন্য ভালোবাসার সৌরভ, কন্ঠে কন্ঠে মানবিক কর্মযজ্ঞের অনুরণন

প্রকাশিতঃ 8:11 pm | July 05, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

যশ বা খ্যাতি- কী নেই ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটুর? ইচ্ছে করলে এই পুঁজি নিয়েই অন্যদের মতো স্রোতের জোয়ারে গা ভাসাতে পারতেন। কিন্তু তিনি সবার মতো হননি। নিজের মতোই হয়েছেন। নিজের প্রতিদিনের প্রতিটি ক্ষণকে বিলিয়ে দিয়েছেন একটি উন্নত-সমৃদ্ধ নগরীর জন্য। নাগরিক বাসিন্দাদের ভালোবাসার মায়াবি মোহনায়।

কল্যাণ বা সহমর্মিতার রাজনীতির সুর গেঁথেছেন প্রাণে প্রাণে। করোনার ঘরবন্দি জীবনকে আলিঙ্গণ না করে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিয়েছিলেন নগরবাসীর সুরক্ষায়। নানাভাবে দু:স্থ, বিপন্ন এবং অসহায় মানুষের পাশে থাকাকেই করেছিলেন নিজের ‘রুটিন ওয়ার্ক’। খাদ্য বা আর্থিক সঙ্কটে হাসফাঁস সময়ে প্রকৃত মনুষ্যত্ববোধের পরিচয় দিয়ে সহনীয় করেছিলেন অসহায় বা বিপন্ন নগরীর সেইসব বাসিন্দাদের জীবনমানকে।

ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মাঠ আঁকড়ে থেকেছিলেন কম করে হলেও ৭০০ দিন। প্রশান্তির পরশ বিলিয়ে দিয়েছেন হৃদয়ের ঐকতানে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবিকতার প্রোজ্জ্বল আভায় প্রস্ফুটিত করেছিলেন। জীবন ভীতির উলট-পালট সময়কার করোনার প্রতিটি ঢেউয়ের দিনলিপিতে সাহস খোঁজার প্রেরণাময় ও ভরসা রাখার মতোন এক জনপ্রতিনিধি হিসেবে আবির্ভূত করেছিলেন নিজেকে। মানবিক রাজনীতির রথে গতি সঞ্চার করে ছুটোছুটি করেছেন নগরীর মাথা থেকে অন্য মাথায়, অহর্নিশ।

করোনার দহন দিনে মন ছুঁয়ে যাওয়া মানবিক গুণাবলীতে নিজেকে আচ্ছাদিত করেছেন যিনি- সেই মেয়র ইকরামুল হক টিটু করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। সেই থেকে নগরীর কালিবাড়ী রোডের বাসভবনে আইসোলেশনে রয়েছেন মেয়র। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আইসোলেশনে থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন এবং খাবার গ্রহণ করছেন।

যে নগরবাসীর বিপদে বা সঙ্কটে তিনি আস্থার প্রতীক- সেই নগরবাসীও করোনা আক্রান্ত এই নগর সেবকের জন্য ব্যাথাতুর ও অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠেছেন। নিজের আদর্শিক রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগসহ প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী তো বটেই একেবারে সাধারণ মানুষেরও কাছ থেকেও তিনি কুড়িয়েছেন ভালোবাসার ফুল।

অনলাইনে-অফলাইনে, মসজিদ-মাদ্রাসায়, এতিমখানায় এবং বিভিন্ন সামাজিক-পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে তাঁর আরোগ্য কামনায় হয়েছে, হচ্ছে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। আইসোলেশনে থেকে ভালোবাসার সৌরভে এভাবেই নিজেকে একদিন-প্রতিদিন ভাসিয়ে চলেছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু। তাঁর অনন্য মানবিক কর্মযজ্ঞ এক আলোচিত অধ্যায়। সেটিই কীনা এখন অনুরণন তুলেছে অনিন্দ্য কন্ঠে কন্ঠে, জীবনের জয়গানে।

ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে মেধা-মনন, সততা-নিষ্ঠা, প্রখর দক্ষতা এবং সৃজনশীল উদার ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর আরোগ্য কামনার বার্তা। এসবই যেন একজন প্রকৃত ‘নগর পিতা’ টিটুর জন্য নগরবাসীর বিশালতার উপমারই স্বাক্ষ্য দিচ্ছে যেন!

মানবসেবাই তাঁর জীবনের সত্যনিষ্ঠ এক অনুসঙ্গ
প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা সংক্রমণের শুরুর দিককার কথা। ২০২০ সালের ৮ মার্চ অতিমারীর তান্ডব শুরুর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে করোনা যুদ্ধে আলো ও আশা জাগানোর নিরন্তর প্রয়াস গ্রহণ করেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু। ক্লান্তিহীন স্বপ্ন-অভিযাত্রী যোদ্ধা হিসেবেই আরও একবার প্রমাণ করেন মানবসেবাই তাঁর জীবনের সত্যনিষ্ঠ এক অনুসঙ্গ।

সংক্রমণের শুরুর দিকেই নিজে উপস্থিত থেকে জীবাণুনাশক ও ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি ছিটানোর কাজ তদারকি করেন। পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করেন নগরীর প্রধান সড়ক থেকে ওয়ার্ডগুলোর অলিগলিও। দিন-রাত কাজ করেছেন জনসচেতনতা তৈরিতে। মনিটরিং করেছেন করপোরেশনের নিত্যকার কার্যক্রম।

একই সঙ্গে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার, নাগরিকদের মধ্যে মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার বিতরণ এবং বিভিন্ন এলাকায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেন মেয়র। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সুরক্ষার জন্য তুলে দেন পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী।

নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে মেয়র ইকরামুল হক টিটু চালু করেন প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ খাদ্য কর্মসূচি। প্রায় ৭৫ হাজার পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসেন। সরকারি প্রায় ১ লক্ষ, মেয়রের ব্যক্তিগত তহবিলের ৫৫ হাজার এবং সংগ্রহ করা সাড়ে ৫ হাজার ব্যাগ খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হয় করোনাকালীন সময়ে। মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরুষ ও নারী কাউন্সিলররা তালিকা তৈরী করে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণের চাল, ডাল ও আলু বিতরণ করেন।

সূত্র জানায়, করোনার মহাপ্রলয় শুরুর পর কাঁচা বাজার স্থানান্তরের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ময়মনসিংহ থেকেই। করোনায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মেয়র টিটু ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে কাঁচা বাজার স্থানান্তর করেন। বস্তি ও ঘনবসতি এলাকায় কাজ করে সিটি কর্পোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প।

জনসচেতনতার জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে। ১৯ হাজার ৬১১ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় সাবান এবং সুরক্ষা সামগ্রী। অতিদরিদ্র ৪ হাজার ৭৫৫ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় ১ হাজার ৫০০ করে টাকা। ৯৪টি সিডিসির হাত ধোয়ার পয়েন্টে বিতরণ করা হয় সাবান।

সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে কয়েক দফায় পাওয়া ৫০০ টনের বেশি চাল, ৫০ টনের বেশি ডাল ও ১০০ টনের বেশি আলু উপহার হিসেবে হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয়। মেয়র টিটু নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিতরণ করেন প্রায় ৭০ হাজার ব্যাগ খাদ্য।

আওয়ামী লীগ, অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনকে এই কর্মযজ্ঞে সম্পৃক্ত করেন। এমন মানবিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হতে পেরে দলীয় নেতা-কর্মীরাও উজ্জীবিত হন। এর মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্মানিত করার পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক ভিত্তিও সুসংহত করেছেন মেয়র টিটু।

স্থানীয়রা বলছেন, শুধু করোনা নয়, প্রতিটি দুর্যোগেই শ্রমজীবী, অভাবী ও অসহায় জনগোষ্ঠী নিজেদের নাগালেই পেয়েছেন সাহসী ও কর্মবীর এই মেয়রকে। ফলে গোটা ময়মনসিংহ জেলায় ‘লাপাত্তা’ ও ‘অলস’ জনপ্রতিনিধিদের মিছিলে ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ হয়ে উঠেন তিনি।

কর্মবীর সাহসী মেয়র প্রগাঢ় স্নেহ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর
‘সমকালীন রাজনীতিতে তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে সততা ও আদর্শবাদের এক প্রতিকৃতি হিসেবেও উচ্চারিত হয় নগর পিতা ইকরামুল হক টিটু’র নাম। বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে থেকে মানব কল্যাণের মিশনই তাকে স্থানীয় নাগরিকদের কাছে করে তুলেছে বিশ্বস্ত ও গ্রহণযোগ্য’-বলছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহীনূর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি মহানুভব এই রাজনীতিকের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’

নিভৃতে কাজ করে চলা এই কর্মবীর সাহসী মেয়র প্রগাঢ় স্নেহ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। করোনা সঙ্কটের সময় একটি ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহেই কথা বলেছিলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র। নগরজুড়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার নাতিদীর্ঘ উপস্থাপন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মুগ্ধ হয়েছিলেন কর্মমুখর এই নগর সেবকের সম্মোহনী বক্তব্যে।

ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নওশেল আহমেদ অনি বলেন, ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, সদা হাস্যোজ্জ্বল মাননীয় মেয়র ইকরামুল হক টিটু দলমত নির্বিশেষে সবার কাছেই আপনজন। উদ্দীপ্ত তারুণ্যের কাছে ‘আইকন’। মেধাবী, রুচিশীল, আধুনিক ও উদার এই নগর পিতা দক্ষতার সঙ্গে নগর পরিচালনার পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও আগলে রেখেছেন অপরিমেয় ভালোবাসার বাহুতে। আমরা করোনার সম্মুখ যোদ্ধা ইকরামুল হক টিটু মহোদয়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’

ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমিন কালাম বলেন, ‘নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে টিটু নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সকলের প্রিয় এই মানুষ জীবনবাজি রেখে নাগরিক সুরক্ষার জন্য কাজ করেন। তিনিই আজ করোনা আক্রান্ত। আমি দ্রুত তার সুস্থতা কামনা করছি।’

কালের আলো/এমএএএমকে