‘জিনের বাদশা’ হাতিয়ে নিল ৬০ লাখ টাকা
প্রকাশিতঃ 4:49 pm | August 04, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
চট্টগ্রামের এক নারীর স্বামী বিদেশ থাকেন। তার দুরারোগ্য ব্যাধি ছিল। এই রোগ থেকে মুক্তির আশায় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন দেখে ‘জিনের বাদশা’কে ফোন করলে ওই ভুক্তভোগী নারীকে বলা হয়, তার সমস্যার সমাধান করা হবে। জিনের বাদশা নামধারী চক্রটি ওই নারীকে ফাঁদে আনার জন্য প্রথমে ৯৯৯ টাকা নেয়। তবে এই টাকা গরিব মানুষদের খাওয়ানো হবে বলে জানানো হয়।
এরপর ধাপে ধাপে ‘জিনের বাদশা’র সঙ্গে কথা বলে দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় প্রায় ২২ লাখ টাকা খোয়ান ওই নারী। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করত। গত ছয় মাসে চক্রটি বিভিন্নজনের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বুধবার (৪ আগস্ট) মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, জিনের বাদশা পরিচয়দানকারী মো. আল আমিন জয়যাত্রা টিভিসহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম ও কেবল নেটওয়ার্কের চ্যানেলে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা করা, দাম্পত্য কলহ দূর করাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিজ্ঞাপন দিতেন। সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ যোগাযোগ করলে নারী কণ্ঠে কথা বলে ফাঁদে ফেলতেন তিনি। পরবর্তীতে কথা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি।
পুলিশ সুপার বলেন, বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে কেউ যোগাযোগ করলে বিস্তারিত তথ্য নিতেন জিনের বাদশা। পরে এলাকার গরিব মানুষকে খাওয়ানোর নাম করে ৯৯৯ কিংবা ১১১১ টাকা দাবি করতেন। টাকা পাঠানোর পর জিনের বাদশা রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে ফোনে কথা বলে সমস্যা সমাধান করবেন বলে ভুক্তভোগীদের আশ্বাস দিতেন।
এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (২ আগস্ট) ভোলায় অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশা মো. আল আমিনকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে,মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) ঢাকার ডেমরায় অভিযান চালিয়ে বাকি দুই সহযোগী মো. রাসেল ও মো. সোহাগকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের খুলশি থানায় মামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এবং সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/আরএস/এমএইচএস