‘রাতের রানী’ পিয়াসা-মৌয়ের কাজ ছিল উচ্চবিত্তদের ব্ল্যাকমেইল করা
প্রকাশিতঃ 12:14 pm | August 02, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করাই ছিল ‘রাতের রানী’ বলে সুপরিচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের কাজ।
রোববার (০২ আগস্ট) রাত ১০টার পর রাজধানীর বারিধারা ও মোহাম্মদপুরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা ও সিসা জব্দ করা হয়।
আটকের পর তাদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দুজন পরস্পসের সঙ্গে যোগসাজশে নানা রকম অপরাধ করে আসছিলেন।
আটকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, তারা দুজন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পেয়েছি। সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আজ তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দুজনের বাসায় বিদেশি মদ, ইয়াবা ও সিসা পাওয়া গেছে। মৌয়ের বাড়িতে মদের বারও ছিল।
ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রানী। তারা দিনের বেলায় ঘুমান এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় আসলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ধারণ করে রাখতেন। পরে তারা সেসব ভিডিও ও ছবি ভুক্তভোগীদের পরিবারকে পাঠাবে বলে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিতেন।
তিনি বলেন, তাদের বাসায় মাদক পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও গুলশান থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হবে। এছাড়া, তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের যে অভিযোগ রয়েছে, সেজন্য আলাদা মামলা হবে। এসব মামলায় তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে রোববার (০১ আগস্ট) রাতে প্রথমে রাজধানীর বারিধারা এলাকায় ৯ নম্বর রোডে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলের সাবেক স্ত্রী মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পিয়াসার ঘরের টেবিল থেকে চার প্যাকেট ইয়াবা জব্দ করে ডিবি। পরে তার রান্নাঘরের ক্যাবিনেট থেকে নয় বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে ফ্রিজ খুলে একটি আইসক্রিমের বাক্স থেকে সিসা তৈরির কাঁচামাল ও বেশ কয়েকটি ই-সিগারেট পাওয়া যায়।
এর পর পরই দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আরেক মডেল মৌয়ের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ। এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমান মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, তার বাসায় বারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে মৌয়ের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, গনমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ওই বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছিল। মিরপুর রোড সংলগ্ন ২২/৯ বাবর রোডের ওই বাসার নিচতলায় থাকতেন মৌ। বাসার ভেতরে ড্রয়িং রুমের পাশেই একটি মিনি বার দেখা গেছে। বাসার ভেতরের বেডরুমের একটি ড্রয়ার থেকে পাঁচ প্যাকেট ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ওই বেডরুমের ভেতরে আরেকটি ড্রেসিং রুম থেকে অন্তত এক ডজন বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।
কালের আলো/ডিএসকে/এমএম