টঙ্গীতে আধিপত্য বিস্তারে বেপরোয়া ছিল ‘ডি কোম্পানি’
প্রকাশিতঃ 10:46 am | June 09, 2021

অপরাধ সংবাদদাতা, কালের আলো:
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর পূর্ব থানার আরিচপুর এলাকায় দুটি হামলা চালায় কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানি’র সদস্যরা। এভাবে হামলা, ভাঙচুর, মারামারি ও হত্যাকাণ্ডের মতো নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়ে টঙ্গীতে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলো গ্রুপটি।
আটক হওয়ার ডি—কোম্পানির গডফাদার লন্ডনী বাপ্পীসহ গ্যাংয়ের সদস্যরা এ কথা স্বীকার করেছে।
ভয়ঙ্কর কিশোর গ্যাং ডেয়ারিং কোম্পানি বা ডি কোম্পানির গডফাদার রাজীব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডনী বাপ্পীসহ ১২ জনকে ৫ জুন রাজধানীর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে রঅাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ২টি চাপাতি, ২টি রামদা, ৩টি রড ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরব এবং রাজীব আহমেদ নীরব ওরফে টম নীরব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে দুই শতাধিক কিশোরকে সক্রিয় রাখত। এ দুজন ছাড়াও গ্রেপ্তার অন্যরা হলো- তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারি তানভীর, পারভেজ ওরফে ছোট পারভেজ, তুহিন ওরফে তারকাটা তুহিন, সাইফুল ইসলাম শাওন, রবিউল হাসান, শাকিল ওরফে বাঘ শাকিল, ইয়াসিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন, মাহফুজুর রহমান ফাহিম ও ইয়াছিন মিয়া ওরফে ইয়াছিন।
এর আগে গত ১ জুন রাতে ‘ডি কোম্পানি’র সদস্যরা টঙ্গীর পূর্ব থানার আরিচপুর এলাকার ভূঁইয়াপাড়া জামে মসজিদের সামনে মো. তুহিন আহমেদ এবং তুষার আহমেদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এ ঘটনায় পরের দিন তুহিন আহমেদ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পর দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ঘটনার পরপরই র্যাব তদন্ত শুরু করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযানে নামে।
র্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আব্দুল মুত্তাকিম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা মাদক সেবন, স্কুল-কলেজে বুলিং র্যাগিং, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
র্যাব সূত্র জানায়, এই গ্রুপের প্রধান রাজীব চৌধুরী বাপ্পী এর আগেও অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। এ ছাড়া একটি অপহরণ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি সে জামিনে বেরিয়ে ফের বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
তার ভাই পাপ্পু ওরফে লন্ডন পাপ্পু এক সময় লন্ডনে ছিল। লন্ডন থেকে ফিরে এলাকায় মাদক কারবার, মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও বিভিন্ন অপরাধে সে এখন কারাগারে রয়েছে। জামিনে বেরিয়ে ফের বেপরোয়া হওয়ার ফন্দি আঁটছিল সে।
সূত্র আরও জানায়, ‘ডি কোম্পানি’সহ টঙ্গীতে আরও কয়েকটি কিশোর গ্যাংয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। একেক গ্রুপের সঙ্গে মারামারি, ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত রয়েছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় র্যাব।
কালের আলো/ এমএম/জিএস