মানুষ যেন মনে করে, পুলিশ আমাকে সাহায্য করবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 6:44 pm | January 09, 2018

স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ বাহিনীকে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “মানুষ যেন মনে করে, পুলিশ আমাকে সাহায্য করবে, আমার পাশে আছে, আমার একটা ভরসার স্থান। সেই জায়গাটা অর্জন করতে হবে, সেই বিশ্বাসটা গড়তে হবে।”

মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং পুলিশের মহাপরিদর্শন এ কে এম শহীদুল হকও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, তিনি বলেন, “আপনার সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেই ২০১৩ সালের হেফাজতি তাণ্ডব, ১৪ ও ১৫ সালের নজিরবিহীন বোমা সন্ত্রাস এবং ১৬ ও ১৭ সালে জীবনবাজি রেখে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোরভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।”

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকার্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করা সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। সে দায়িত্বটা আপনারা অবশ্যই করতে পারবেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আগে একটা কথা ছিল- বাঘে ধরলে এক ঘা, পুলিশে ধরলে ১৮ ঘা। সেই প্রবাদ বাক্য যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়।”

অতীতের তুলনায় পুলিশ বাহিনী এখন জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অনেক বেশি অর্জন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগের সেই অবস্থা এখন আর নেই।”

এসময় মাদকের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনীকে আরও কঠোর হবার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কোথা থেকে আসে, কারা ব্যবহার করে, কারা সম্পৃক্ত, কারা মাদকের ব্যবসা করে; তা খুঁজে বের করতে হবে।”

জঙ্গি দমনে যেভাবে অভিযান চালিয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একই ধরনের অভিযান চালাতে তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।

সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি যেমন জীবনযাত্রা সহজ করেছে, ক্ষেত্র বিশেষে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশকে আরও আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।”

পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনীর প্রশিক্ষণের উপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে থেকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে ভোটের বছর পুলিশকে কঠোর হওয়ার বার্তাও দেন শেখ হাসিনা।

আগামীতে এই ধরনের কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা সহ্য করা হবে না বলে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সাধারণ মানুষের গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারা; এই রাজনীতি গ্রহণযোগ্য না। এটা আমাদের কাছে কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমরা বরদাশত করবো না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সব কাজ কিন্তু সব সময় এককভাবে করা যায় না। নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে পরিকল্পিতভাবে অভিযানে গেলে হতাহতের সংখ্যা কম হয় এবং বেশি সাফল্য আসে। আমার নির্দেশ আছে; কোনো তথ্য পেলে শেয়ার করে কী করণীয়; সে বিষয়টা একে অপরকে জানাবে। পরিকল্পিতভাবে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী একক কৃতিত্ব নেয়ার প্রবণতা পরিহারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় ক্রেডিট নিতে যেয়ে একা একা করতে যেয়ে নিজেকেই জীবন দিতে হয়। এই চিন্তা ভাবনাটা কিন্তু ঠিক না।”

Print Friendly, PDF & Email