চামড়ার দাম নিয়ে অসন্তোষ, তবু চলছে কেনাবেচা

প্রকাশিতঃ 10:07 pm | August 01, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট বেপারি ও ফড়িয়া উভয় পক্ষ। এর মধ্যে দিয়েই রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় অস্থায়ী হাটে চামড়া কেনাবেচা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে চামড়া সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন এখানে। বেপারিরা দরদাম করে তা কিনছেন।

শনিবার (১ আগস্ট) ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সায়েন্স ল‌্যাবে গিয়ে দেখা গেছে, মান ও আকার ভেদে বেপারিরা প্রতিটি গরুর চামড়া দাম হাঁকছেন ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত। খাসির চামড়া ৪০ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ টাকা দাম দিতে যাচ্ছেন বেপারিরা।

এ বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর ২৮ থেকে ৩২ টাকা। গত বছর ঢাকায় দর ছিল ৪৫-৫০ টাকা প্রতি বর্গফুট। এ বছর দাম কমানো হয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। ঢাকার বাইরে গত বছর গরুর চামড়ার দর ছিল ৩৫-৪০ টাকা প্রতি বর্গফুট, যা এবারে কমানো হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গরুর চামড়ার গড় আকার ২১ বর্গফুট। সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী এবার চামড়ার দাম হয় ৭৩৫ টাকা থেকে ৮৪০ টাকা। কিন্তু চামড়া বেচাকেনার পর্যায়ে এ দর মিলছে না। বেপারিরা গরু, খাসি ও বকরির চামড়ার দাম প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে বলছেন। এতে মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা হয়েছে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের।

সায়েন্স ল্যাবে চামড়ার বেপারি মো. জহির উল্লাহ বলেন, ‘সরকার লবণ দেওয়া চামড়ার দাম বেঁধে দিয়েছে, কাঁচা চামড়ার নয়। লবণজাত চামড়ার নির্ধারিত মূল্য বিক্রি পর্যায়ে বেপারিদের পরিশোধ করবেন ট্যানারি মালিকরা। বেপারিরা কিনবেন তার চেয়েও কম দামে। যারা কাঁচা চামড়া কেনেন, তাদের কিনতে হবে আরো কম দামে। এখন কেউ যদি কাঁচা চামড়া কেনার সময় লবণজাত চামড়ার দাম দেয়, তাহলে তার দায় বেপারিরা নেবে না।’

সায়েন্স ল্যাব হাটে চামড়া নিয়ে এসেছেন বেগুনবাড়ি এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম পিন্টু ও সাইফুদ্দিন। তারা বলেন, ‘আমরা এলাকা থেকে বেছে বেছে মানসম্পন্ন চামড়া কিনেছি। প্রতিটি গরুর দামই ছিল দেড় লাখ টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকা। এই মানের গরুর চামড়া তো বেশি দরে কিনতেই হবে। আমরা প্রতিটি চামড়া ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু এখন বেপারিদের কাছে বিক্রি করতে এসে দেখছি, তারা ৫০-৬০ হাজার টাকার গরুর চামড়ায় যে দাম বলছে, দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার গরুর চামড়ারও একই দাম হাঁকছে। এখন তো লোকসান ছাড়া উপায় নেই।’

পোস্তা, গাবতলী কিংবা আমিনবাজার চামড়ার আড়তের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘সেখানে যেতেও তো পরিবহনের খরচ আছে। এখানে যে দাম বলছে, ওখানে যদি একই দাম বলে তাহলে তো আম-ছালা দুটোই যাবে। বাধ্য হয়ে কেনার দামের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে বিক্রি করলাম ৩৯ পিস চামড়া।’

কালের আলো/এসবি/এমআর

Print Friendly, PDF & Email