প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্বে এক মোহনায় দেশ, মানুষকে ‘সুরক্ষার যুদ্ধে’ সেনাবাহিনী

প্রকাশিতঃ 11:53 am | March 30, 2020

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর, কালের আলো :

মরণঘাতী করোনার ভয়াবহতায় নীরব-নিথর পুরো বিশ্ব। মৃত্যু উপত্যকা হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা ইউরোপ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে। মৃত্যুর বিভীষিকায় হাসফাঁস করছে মার্কিন মুল্লুকও।

এমন পরিস্থিতিতে শোকস্তব্ধ সবাই। ভয়ানক এই সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো জাতিকে সম্মোহনী শক্তিতে জাগ্রত করেছেন।

বাঙালির ঐক্য ও সমুজ্জ্বল প্রতীক, বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশে মহাশক্তিধর জীবাণু করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শিরদাড়া শক্ত করে মানুষকে সুরক্ষার অন্য রকম এক যুদ্ধে নেমেছেন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সর্বোচ্চ জীবন ঝুঁকি নিয়ে তারা ছুটছেন অদৃশ্য শত্রু বিষধর করোনাকে পর্যদুস্ত করে, প্রত্যয় প্রতীতিতে।

ষোল কোটির বাংলাদেশের মানুষের জীবন রক্ষায় নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে মানবিক হৃদয় নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেতুলিয়ায় ‘সঙ্গনিরোধ’ নিশ্চিত করতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এতে করে দেশের রাজধানী ঢাকা তো বটেই ফাঁকা দেশের অন্যান্য জনপদও। নেই কর্মমুখর মানুষের পদাচরণা। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে তারা যেমন মাইকিং ও প্ল্যাকার্ড হাতে হাতে মানুষকে সচেতন করছেন তেমনি জেলায় জেলায় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতাও করছেন।

পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। প্রাণসংহারী করোনার বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশিত পথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

সরকার যতোক্ষণ চাইবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ততক্ষণ নাগরিকদের সহায়তা প্রদান করতে মাঠে থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দেশের প্রভাবশালী একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে আলাপে সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে সেনাবাহিনী যথাসম্ভব চেষ্টা করবে।’

জনগণের আত্নার স্পন্দন ছোঁয়া সেনাপ্রধানের এমন কথামালা যেন দেশের সাধারণ মানুষের আত্না ও শরীরে প্রজ্জ্বলিত হয়েছে গভীরভাবে। ফলে সেনা সদস্যদের আহ্বানে অভূতপূর্ব সাড়া দিচ্ছেন ঘরবন্দি মানুষ।

জানা যায়, বিশ্বজুড়ে মহামারি ছড়ানো করোনার তীব্রতা বাংলাদেশে রুখে দিতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকার। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করে। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট ও গণপরিবহন।

রাজধানী ঢাকা থেকে সারাদেশে অঘোষিত লক ডাউন কার্যকর হওয়ায় থমকে যায় দেশ। শুরু হয় বিচ্ছিন্ন-অবরুদ্ধ পরিস্থিতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাধারণ মানুষকে ঘরের ভেতর রাখতে উৎসাহী করতে, সামাজিক দূরত্ব ও বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতেই মূলত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নেতৃত্বে দেশজুড়ে সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীকে মাঠে নামানোর ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস। 

গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সোমবার (২৩ মার্চ) নিজের কার্যালয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বুধবার (২৫ মার্চ) থেকে জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে সেনাবাহিনী টহল কার্যক্রম শুরু হয়।

করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশবাসীকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান।

সরকার প্রধানের আহ্বান এবং সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়াসের দৌলতে সাধারণ মানুষজন ঘরের ভেতরেই নিজেদের স্বেচ্ছা বন্দির কার্যক্রমে স্বত:স্ফূর্তভাবে সাড়া দেন। ফলে ‘জনশুন্য’ বিরল এক অবস্থার দেখা মিলে দেশজুড়ে।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ কালের আলোকে জানান, রোববারও (২৯ মার্চ) দেশের ৬২ টি জেলায় সেনাবাহিনীর ৩৭১ টি দল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। প্রায় ৫ হাজার সেনাসদস্য এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

আমাদের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজনের খোঁজ খবর নিতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সেনা সদস্যরা। দিচ্ছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নাগরিকদের সচেতন করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন পুরোমাত্রায়।

জেলায় জেলায় দেশপ্রেমিক এই বাহিনীর এমন কর্মপ্রয়াস প্রকারান্তরে ভাইরাসটির ছোবল থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত করছে। রাজধানী ঢাকা, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্য আর ওষুধের দোকানে ক্রেতাদের দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব ঠিক করে দিচ্ছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে কেনাবেচা চলছে কীনা এই বিষয়টিও নিবিড়ভাবে তদারকি করা হচ্ছে। এর বাইরে অন্যান্য দোকানসমূহ সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বন্ধ আছে কীনা তা দেখতেও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

জেলায় জেলায় মসজিদ, হাসপাতাল ও সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক স্প্রে। এর মাধ্যমে সড়কসমূহকেও নিরাপদ করা হচ্ছে।

সরকারি নিয়ম অমান্য করে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন তাদের আইনের আওতায় আনতে বিশেষ তৎপরতা চালাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনেকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সুরক্ষার মাস্ক।

আবার দেশব্যাপী খেটে খাওয়া মানুষজনের দু:সময়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন। দেশব্যাপী উপার্জন হারানো নিম্ন আয়ের মানুষজনকে দেওয়া হচ্ছে মানবিক সহায়তা। বিতরণ করা হচ্ছে ভোগ্যপণ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী।

দুর্গম পাহাড় থেকে শুরু করে চরাঞ্চল বা দেশের প্রতিটি এলাকায় করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণ মানুষের জন্য গভীর আন্তরিকতার সঙ্গেই কাজ করছেন। তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিপদগ্রস্ত মানুষদের ফলমূল ও নানা ধরণের খাবার সরবরাহ করছেন।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের (আর্টডক) জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস.এম.শফিউদ্দিন আহমদ কথা বলেন কালের আলোর সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সার্বিক দিক নির্দেশনায় আমাদের সেনা সদস্যরা নিজেদের পরিবার ও স্বজনদের মায়া মমতা কাটিয়ে জাতীয় জীবনের এই সংকটের মুহুর্তে দেশবাসীর জন্য কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্যই নিজেদের জীবনবাজি রেখেছেন।’

প্রকৃত অর্থেই প্রশিক্ষিত, শক্তিশালী ও দক্ষ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন অনেকটাই উৎস্বর্গ করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মহা আতঙ্ক কাটিয়ে তারা সাধারণ মানুষকে নিরাপদ করেছেন।

নিজেদের জীবন ও স্বজনদের কথা না ভেবে সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষায় তাদের নিরলস পথচলা মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে’ বলছিলেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলাম।

রাঙামাটিতে দীর্ঘ দিন যাবত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাস ফেরত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফলমূল পৌঁছে দিয়েছেন সেখানকার সেনাবাহিনীর স্থানীয় রিজিয়নের সদস্যরা।

সেনাবাহিনীর এই শুভেচ্ছা উপহারে নিজের খুশির কথা জানিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা সেখানকার এক প্রবাসী কালের আলোর স্থানীয় প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, ‘সেনা সদস্যদের মানবিকতায় মুগ্ধ হয়েছি।’

রোববার (২৯ মার্চ) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহমেদ বলেন, করোনার বাইরেও অনেকেই চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাদের সেবায় অচিরেই সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম কাজ করবে।

তারা মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করবে। সামরিক বাহিনীর চিকিৎসকরা দেশের দুর্যোগময় সময়ে অতীতের মতো মানুষের পাশে থাকবে।

আরও জানা গেছে, করোনা মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপসমূহ বেগবান এবং কার্যকরী করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছে সেনাবাহিনী।

প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রোববার (২৯ মার্চ) গণভবনে এই তহবিলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল পদবীর সদস্যদের একদিনের বেতনের পাশাপাশি সেনা কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী লিমিটেড, বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট লিমিটেড ও ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে ২৫ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউসের হাতে তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।  

একই সূত্র জানায়, এই ধারাবাহিকতায় সকল নৌ সদস্যদের এক দিনের বেতন ও নৌবাহিনী পরিচালিত অন্যন্য প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এবং সকল বিমান সেনাদের এক দিনের বেতন বাবদ এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা প্রধানমন্ত্রির ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সব সময় জনগণের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ মনে করতেন বাঙালি জাতির মহানায়ক, তেজোদীপ্ত ধন্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতা ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে পাসিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসেবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবাইসো। তোমাদের সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে।’

সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত। সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে কার্যকর ও যুগান্তকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রণয়ন করা হয়েছে ফোর্সেস গোল ২০৩০। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে সেনাবাহিনী।

এই সুনাম আরও এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ শান্তি আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জানবে-এমন প্রত্যাশার কথা প্রধানমন্ত্রী উচ্চারণ করেছিলেন মাস তিনেক আগে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মযজ্ঞেও যেন বারবার সেই প্রমাণই মিলেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সব সময় দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যে নিজের বাহিনীর সদস্যদের সেইভাবেই উজ্জীবিত করেছেন।

চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলাসহ দেশের আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।

একইসাথে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অভূতপূর্ব অবদান রাখছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতেও মাতৃভূমির অখণ্ডতা রক্ষা তথা জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

সত্যিকার অর্থেই দক্ষিণ এশিয়ার দুর্যোগপ্রবণ দেশ বাংলাদেশে বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্নিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সব সময় সঠিকভাবেই কাজে লাগিয়েছে সরকার।

সাভারের রানা প্লাজ ট্র্যাজেডির মতো বিপর্যয়েও সরকারকে কার্যকর সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনী। সরকারের দেওয়া এসব দায়িত্বও সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করেছেন সেনা সদস্যরা।

সরকারের নির্দেশে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের ক্লান্তিহীন পথচলা বিমর্ষ, বিপন্ন মানুষের ভেতর শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাধারণ মানুষকের সুরক্ষার এই লড়াই একাত্তরের মতো সাধারণ মানুষকে এক মোহনায় মিলেয়েছে। তাদের ভূমিকায় সন্তুষ্ট দেশের আপামর জনসাধারণ।

ইংরেজি ওই দৈনিকের সঙ্গে আলাপে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ নিজেও দৃঢ় উপলব্ধির জায়গা থেকেই বলেছেন, ‘করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বেসামরিক প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষ অত্যন্ত উৎসাহী। দেশের মানুষকে এই সহায়তা দিতে পেরে মানসিকভাবে স্বস্তি পেয়েছেন সেনা সদস্যরাও।’

কালের আলো/এমএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email