ইতালিতে দুই দিনব্যাপী বিজয় দিবস উদযাপন
প্রকাশিতঃ 10:37 am | December 17, 2019

কালের আলো ডেস্ক:
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করেন ইতালিতে বসবাসকারী বাঙালিরা।
প্রথম দিন (১৫ ডিসেম্বর ২০১৯) দূতাবাসে আয়োজন করা হয় শিশু-কিশোরদেরর জন্য চিত্রাঙ্কন, বিজয় ফুল তৈরি ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতার শেষে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিকঅনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সবার শেষে রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার ও তাঁর সহধর্মিনী প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোর, তাদের অভিভাবক ও দূতাবাস পরিবারের বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার উপস্থিত শিশু-কিশোরদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের স্বশস্ত্র রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে। জন্ম হয় স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় দিন (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সমস্বরে জাতীয় সংগীত গেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন।
সন্ধ্যায় প্রবাসী বাঙালি অধ্যুষিত তুস্কুলানা এলাকার Teatro San Gaspare মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালি অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।
দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনায় বক্তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যাঁর নেতৃত্বে বাঙালি পেয়েছে এক স্বাধীন বাংলাদেশ।

রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যাঁর অবিসংবাদী নেতৃত্বে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ ও সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাঙালিরা তদানীন্তন পাকিস্তানের অধীনে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার ছিল। এই বৈষম্য থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তি প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালি রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করেছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদানের জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু তিনি এ কাজ সমাপ্ত করার আগেই ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে সপবিবারে শহীদ হন। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সব প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েনিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে রোমের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী ও শিশু শিল্পীরা দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে বাঙালির গৌরবময় বিজয়কে ফুটিয়ে তোলেন।
কালের আলো/পিআর/এডিবি