নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক সেনাদের খাতিরের রহস্য তদন্তের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ এমপি। দলীয় চেয়ারপার্সনের কারাবাস নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের জেরে এমন তদন্তের কথা বলেন মন্ত্রী।

রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবনে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি), গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড আয়োজিত সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইসতাক হোসেন এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সম্প্রতি খালেদা জিয়ার কারাবাস নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘বেগম জিয়া পাকিস্তানি সেনাদের কাছে যে সম্মান পেয়েছিলেন, এখন তাও পাচ্ছেন না’।

বিএনপি মহাসচিবের কথার সূত্র ধরেই তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্যে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর কাউকে পানি খাওয়ানোর অপরাধেই পাকিস্তানি সেনারা মানুষ হত্যা করেছে, ২ লাখ ৭০ হাজার মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে, সেই পাকিস্তানি সেনারাই খালেদা জিয়াকে এত খাতিরের কারণ কী? তদন্তের মাধ্যমে তা জানার চেষ্টা করা উচিত।

তথ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনকে অকুতোভয় সংগ্রামের এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যায় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জিয়াসহ এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জাতির পিতার খুনিদের বিচার সম্পূর্ণ হবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বিচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। কারণ, পলাতক খুনি ও বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার এখনও হয়নি।’ এ জন্য একটি কমিশন গঠন করে বিচার সম্পন্ন হলে তা ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদাহরণ হয়ে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলবদের বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি।’

আলোচনা সভায় বিশেষ আলোচকের ভাষণে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য ভূমিকার জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন।

সভায় তথ্যসচিব আবদুল মালেক, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নিজামুল কবীরও নিজেদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকপাত করেন।

সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আজহারুল হক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহিন ইসলাম, ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলম প্রমুখ।

পরে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান ও তথ্য সচিব আব্দুল মালেকসহ অতিথিরা তথ্য ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

কালের আলো/এমএইচ/এএ