বঙ্গবন্ধু কোনোদিন আগাম কথা বলেননি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 8:45 pm | March 09, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

বঙ্গবন্ধু কোনোদিন আগাম কথা বলেননি। কারণ, একটি লক্ষ্য স্থির করে তিনি কেবল ধাপে ধাপে আগাচ্ছিলেন না- জাতিকে প্রস্তুত করছিলেন তিনি।

স্মৃতিচারণ করে শুক্রবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় কেআইবি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, একটি যুদ্ধের যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। দেখবেন, ১৯৪৭ সাল থেকেই তিনি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন।

১৯৬২ সালে ছাত্রলীগকে তিনি বলেন, মহকুমাগুলোতে তিন সদস্যের কমিটি হবে। ওই বছরই বঙ্গবন্ধু আগরতলায় গিয়েছিলেন। যেদিন ফেরেন, সেদিনই গ্রেফতার হন। যদিও মামলা দিয়ে তারা কিছুই করতে পারেনি। বাংলার মানুষ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন।

তিনি বলেন, তখন ২০ দলীয় ঐক্যজোট করা হয়েছিল। এখনও তাই আছে। বোঝাই যাচ্ছিল ৫০-৬০টি সিট পাবেই আওয়ামী লীগ। তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থা আইবি ডিপার্টমেন্টে যারা বাঙালি কাজ করত, তারা সহয়তা করেছে। তারা কখনও রিপোর্ট দেয়নি আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মাত্র দুইটা সিট আমি পাব না- বাকিগুলো পাব। সে সময় আমাদের দেশের অনেক রাজনীতিবিদ নির্বাচনের বিপক্ষে ছিল। পাকিস্তানিরা ভাবতেও পারেনি, বাঙালিরা ক্ষমতায় আসতে পারে।

“৭ মার্চের ভাষণে তিনি সরাসরি বলেননি, আবার বাদও রাখেননি। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, কিভাবে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেছেন, ভাই-ভাই হিসেবে থাকার একটা সম্ভাবনা হবে- তিনি বলেননি আমরা এক হয়ে থাকব। তাদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে মুখ দেখা-দেখি হবে কি না।

মুক্তিযুদ্ধে কার, কি ভূমিকা তা তিনি বলে গেছেন। এখন ইউটিউবে দেখবেন, প্রতিটা সাক্ষাতকারে তিনি সব বলেছেন কিন্তু পাকিস্তানিদের ধরার সুযোগ ছিল না। তিনি বলতেন, আমি বাঙলার মানুষের মুক্তি চাই। পাকিস্তানিরা বুঝে উঠতে পারছিল না কি হচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইয়াহিয়া খান ২৬ তারিখে ভাষণ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলেন। বলেছিলেন তার সাজা হবে। আইয়ুব খানের ডায়েরিতে পাওয়া যায়, কোর্টে ঢুকেই বঙ্গবন্ধু বলতেন, জয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যে স্বাধীন হবে সেই ব্যবস্থা করে এসেছি। ৭ মার্চ ভাষণ দেওয়া আগে অনেক চাপ, নেতারা বলছেন এটা বলতে হবে-ওটা বলতে হবে, চিরকুট দিচ্ছেন। আমার মা তখন সব কাগজগুলো নিয়ে নিলেন। বাবাকে বললেন, তুমি চুপ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকবে। তুমি সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছ।

তোমার যা মনে আসবে, তুমি তাই বলবে। ওটা কোনো লিখিত বক্তব্য ছিল না। অথচ তিনি বলে গেলেন, কিভাবে যুদ্ধ করতে হবে। কিভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ চলবে। বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণ ৭৫’র পরে বাজানো নিষেধ ছিল। একটি প্রজন্ম কিছু জানতেই পারেনি। তাদের বিকৃত ইতিহাস জানানো হয়েছে। আজকে সেই ভাষণ বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আমাদের দেশের মানুষের আজ জানার অধিকার আছে। তাই আমি ইতিহাসের নিরব সাক্ষী হিসেবে বললাম। আমরা তো ওই পরিবারের দুইজনই বেঁচে আছি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন, মুক্তির কথা বলেছিলেন। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা এগিয়ে যাব, বলেন শেখ হাসিনা।

 

কালের আলো/এমএ/এসএইচ