ধর্ষণের ৪৪ শতাংশ মামলা প্রমাণ হয়নি তদন্তে

প্রকাশিতঃ 1:07 pm | October 02, 2025

কালের আলো রিপোর্ট:

ধর্ষণের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় করা মামলার প্রায় ৪৪ শতাংশই তদন্তে প্রমাণিত হচ্ছে না। গত ৮ বছরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত করা ১১ হাজারের বেশি মামলা তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে পিবিআই।

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী থানায় হওয়া মামলাগুলোকে জেনারেল রেজিস্ট্রার বা সংক্ষেপে জিআর কেস বলা হয়। ধর্ষণের অভিযোগে হওয়া বিপুলসংখ্যক জিআর মামলা তদন্ত করেছে পিবিআই। তাতে দেখা যায়, এগুলোর বড় অংশ ভুয়া অভিযোগে করা হয়। পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে, প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতির কারণে অনেক মামলা হয়। প্রচলিত ও প্রযুক্তিগত তদন্তে সেসব মিথ্যা ধরা পড়ে। একইভাবে আদালতে করা কমপ্লেইন রেজিস্ট্রার বা সিআর মামলার তদন্তেও প্রচুর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

জানা যায়, পিবিআইয়ের ৪৭টি জেলা ইউনিট ৮ বছরে থানায় হওয়া ১ হাজার ৪৭টি মামলা তদন্ত করেছে। তদন্তে ৫৭৫টি মামলায় অভিযোগপত্র এবং ৪১২টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বাকি ৬০টি মামলার তদন্ত চলছিল। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৪২ শতাংশ মামলা প্রমাণিত হয়নি।

একই সময়ে আদালতের নির্দেশে ১০ হাজার ৫৮১টি সিআর মামলা (আদালতে করা) তদন্ত করে পিবিআই। এর মধ্যে ৫ হাজার ৪৭৪টি মামলা প্রমাণিত হয়। ৪ হাজার ২৪৮টি মামলা প্রমাণিত হয়নি। ৬৬৭টি নানাভাবে নিষ্পত্তি হয়। ১৯২ মামলা তদন্তাধীন ছিল। অর্থাৎ পিবিআইয়ের তদন্তে আদালতে করা মামলার ৪১ শতাংশ প্রমাণিত হয়নি।

তবে পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল বলেছেন, প্রমাণিত না হলেও সব মামলাই ভুয়া নয়। প্রমাণিত না হওয়া মামলার অন্তত ৩০ শতাংশ সত্য। এগুলো তদন্তে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার বলেন, তদন্তে প্রমাণিত না হলেই ঘটনা মিথ্যা বলার সুযোগ নেই। অনেক সময় তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণে আলামত নষ্ট হয়ে যায়, সাক্ষীও পাওয়া যায় না। তখন অভিযোগ প্রমাণও কঠিন হয়ে পড়ে। পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে তদন্তে সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।

কালের আলো/এমএএইচ/এইচএন