ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করতে চান ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর
প্রকাশিতঃ 5:00 pm | June 09, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
রাজ্য প্রশাসনের মতামত না নিয়েই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করছেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম।
বিক্ষোভ দমনে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের নামানোর সিদ্ধান্তকে আইনবহির্ভূত বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিউসাম বলেন, “লস অ্যাঞ্জেলেসে যে বিক্ষোভ হচ্ছে, তার কারণ বা শর্তগুলো ট্রাম্প নিজেই তৈরি করেছেন; আর এখন রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা না করেই তিনি ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের নামিয়েছেন। তার এই পদক্ষেপ আইনবহির্ভূত এবং এ ঘটনায় আমি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
“শুরু থেকে এ পর্যন্ত তার (ট্রাম্প) যেসব কর্মকাণ্ড আমরা দেখছি, সেসব প্রেসিডেন্টের নয় বরং একজন স্বৈরাচারের পক্ষেই শোভা পায়।”
এদিকে একই দিন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেলের সঙ্গেও কথা বলেছে এনবিসি। তিনি জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেছে।
সত্যিই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করা প্রয়োজন ছিল কি না জানতে চাইলে ম্যাকডোনেল তার সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, “আজ রাতে যে বিক্ষোভ পরিস্থিতি দেখছি, তাতে আমার মনে হয় যে আমাদের আগেকার পরিকল্পনা ফের পর্যালোচনা করা উচিত।”
এদিকে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ম্যাকডোনেলকে সমর্থন করে ট্রাম্প বলেছেন, “যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সব নিন। ঠগ-জোচ্চরদের কোনো ছাড় দেবেন না। যুক্তরাষ্ট্রকে ফের মহান করে তুলুন।”
গত ৬ জুন শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেসে নথিবিহীন অভিবাসীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে অভিযানে নামে ক্যালিফোর্নিয়া পুলিশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস বিভাগের আইনপ্রয়োগকারী বাহিনী ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। সেই অভিযান চলাকালে লস অ্যাঞ্জেলেসের উপশহর প্যারামাউন্টে পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের।
প্রসঙ্গত, প্যারামাউন্ট উপশহরটি মেক্সিকো ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসী অধ্যুষিত। এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগেরই বসবাসের বৈধ নথিপেত্র নেই এবং তারা নিজেদের মধ্যে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সংঘাতের ব্যাপ্তি ও তীব্রতা বাড়তে থাকে এবং প্যারামাউন্টের বাইরেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর রূপ নেওয়ার আগেই গতকাল শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয় মার্কিন সামরিক বাহিনীর অধীন আধাসামরিক সংস্থা ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সদস্য।
তবে তাতে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। সরকারি ভবন ও দপ্তরগুলোতে বিক্ষোভকারীদের সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর জন্য সেসব ভবন-দপ্তরের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছেন ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। বিক্ষোভকারীরা এ কারণে সরকারি কোনো ভবনে হামলা না করলেও শনিবার থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। পুলিশ এবং ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এ পর্যন্ত ২ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সূত্র : রয়টার্স
কালের আলো/এসএকে