বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত হয়নি: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশিতঃ 7:58 pm | June 03, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত ছিল না।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে বাজেটোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বেকার সমস্যা ও কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই শুরু হয়েছিল। ফলে তরুণদের ব্যাপক প্রত্যাশা ছিল, বেকার সমস্যার সমাধান এবং কর্মসংস্থানের উদ্যোগ বাজেটে থাকবে।

কিন্তু সেটা আমরা বাজেটে দেখতে পাইনি। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিষয় লিপিবদ্ধ হয়নি। ব্যাংকের প্রতি নির্ভরশীলতা অব্যাহত রয়েছে।

এই বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতিমালা থেকে যে বেকার সমস্যার সমাধান বা কর্মসংস্থান কার্যকরভাবে বৃদ্ধি পাবে, সেটা আমরা মনে করছেন না বলেও জানান নাহিদ ইসলাম।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তেমন কোনো নতুনত্ব নেই। এই সময়ে শিক্ষাখাতে ন্যূনতম দুই শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। একইভাবে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতেও বরাদ্দ বাড়েনি।

তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো উচিত হয়নি। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা নিজেদের উদ্যোগে বিদেশে যান। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, সেটিও যখন কমানো হয়, তখন সরকারের প্রবাসী ভাই-বোনদের প্রতি উদ্যোগ স্পষ্ট হয় না। প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম, কিন্তু দেখা গেল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো হয়েছে।ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ইনসেনটিভ থাকবে, এটাই ছিল আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এই বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, এমন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাইনি। ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মাধ্যমে ভ্যাট ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, এই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত হয়নি। এটি বন্ধ করা উচিত।

তিনি বলেন, জুলাই শহীদ ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আমরা এটিকে সাধুবাদ জানাই। এই টাকা যেন যথাযথভাবে খরচ করা হয়।

শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান নাহিদ ইসলাম।

এর আগে সোমবার উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, বিপর্যস্ত আর্থিক খাত সংস্কার ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের মতো চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ব্যয়ের পরিমাণ বা আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় টাকার অংকে বাজেটের আকার কমছে ৭ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

কালের আলো/এমডিএইচ