বিশ্বে ৮৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ভিডিও গেমস খেলেন
প্রকাশিতঃ 2:44 pm | May 24, 2025

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, কালের আলো:
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে মানুষের বিনোদনের ধরন। আগে যেখানে খেলার মানে ছিল মাঠে গিয়ে বল ছোঁয়া বা ক্রিকেট ব্যাট ধরার অভ্যাস, এখন তার জায়গা দখল করেছে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে খেলা ভিডিও গেম। এই গেমিং ট্রেন্ড এখন আর কেবল তরুণদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—সব বয়সের মানুষ এতে যুক্ত হচ্ছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৮৩.৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন কোনো না কোনোভাবে ভিডিও গেম খেলার সঙ্গে যুক্ত। এই হার বোঝায়, আজকের দিনে ইন্টারনেট ব্যবহার মানেই গেমিং জগতের সঙ্গে কমবেশি সম্পর্ক থাকা।
বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষে গ্লোবাল গেমারের সংখ্যা পৌঁছবে প্রায় ৩৩২ কোটিতে। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, স্মার্টফোনের বিস্তার, সাশ্রয়ী ডেটা এবং মোবাইল গেম অ্যাপগুলোর জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বের গেমারদের মধ্যে এশিয়া সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এ অঞ্চলে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ১৪৮ কোটি। যা বৈশ্বিক গেমিং জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ। চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোতে মোবাইল গেমিং-এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির কারণ।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপ, যেখানে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ কোটি। এরপর রয়েছে লাতিন আমেরিকা, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন গেমিং, ই-স্পোর্টস এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আজকের গেমিং জগৎ শুধুই ভিডিও গেম খেলা নয়। বরং এটি এখন একটি বহুমুখী ইকোসিস্টেম। এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে-
ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট: কোটি কোটি ডলার পুরস্কার নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আয়োজন হয়।
লাইভ স্ট্রিমিং: Twitch, YouTube Gaming-এর মতো প্ল্যাটফর্মে লাখো গেমার নিয়মিত গেম খেলে ও তা লাইভ দেখিয়ে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।
গেম ডেভেলপমেন্ট: লক্ষ লক্ষ ডেভেলপার এখন নতুন গেম তৈরির সঙ্গে জড়িত, যা একটি বিশাল কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও ক্লাউড গেমিং: ভবিষ্যতের গেমিং অভিজ্ঞতাকে নিয়ে যাচ্ছে এক নতুন উচ্চতায়।
গবেষণা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আগে যেখানে গেমিং ছিল কনসোল ও কম্পিউটার নির্ভর, এখন তার সবচেয়ে বড় অংশ হয়ে উঠেছে মোবাইল গেমিং। Subway Surfers, PUBG Mobile, Free Fire, Candy Crush—এইসব গেমের মাধ্যমে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সবাই গেমিংয়ে অংশ নিচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে ছাত্র, চাকরিজীবী, গৃহিণী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও।
তবে এই গেমিং প্রবণতা নিয়ে অনেকের উদ্বেগও রয়েছে। অতিরিক্ত গেম খেলার ফলে আসক্তি, চোখের সমস্যা, মানসিক চাপ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। তাই অভিভাবক ও তরুণদের সচেতনভাবে গেম খেলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কালের আলো/এমএএইচএন