গৌরীপুরে ৬৫ বছরের বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিতঃ 8:13 pm | October 05, 2017

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে নাজমূল হোসেন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বুধবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নাজমূল হোসেন উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের মৃত তালেব হোসেনের ছেলে। বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাজমুল হোসেনের সাথে মাইজহাটি গ্রামের বদরুল হাসান বাচ্চুর বিরোধ চলছিল। দুজনের বিরোধের জের ধরে গৌরীপুর থানায় পাল্টাপাল্টি বেশ কয়েকটি মামলাও হয়।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর নাজমূল ময়মনসিংহ কোর্টে একটি মামলায় হাজিরা দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। পথে পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শিমরাইল এলাকায় নাজমূলের গতিরোধ করে প্রতিপক্ষ বদরুল হাসানের লোকজন। এসময় প্রতিপক্ষ নাজমূলকে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় নাজমূলকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার নাজমূলের লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে বিকেলে জানাজা শেষে নাজমূলকে নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।

এদিকে নাজমূল হোসেনকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় তার ছেলে ইমরুল হোসেন বাদী হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।

মামলায় আসামি করা হয়- মাইজহাটি গ্রামের আতিকুর রহমান, কামরুল হাসান হীরা, আবদুল মান্নান, হাবিবুল্লাহ, আনারুল, ইব্রাহীম, মনির হোসেন, তাজুল ইসলাম, এনামুল ও আবদুছ ছাত্তারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে। ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি আতিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

মামলার বাদী ইমরুল হোসেন বলেন, “বদরুল হাসানের সাথে বিরোধের জের ধরে তার ক্যাডার বাহিনী আমার বাবাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে দুই পা ভেঙে দেয় ও জখম করে। ওদের পিটুনিতেই আমার বাবা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। মামলার পর থেকেই আমরা গ্রামে ঢুকতে পারছিলাম না। আজকে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় বাবার লাশ নিয়ে বাড়িতে আসি।”

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার আহাম্মদ বলেন, “দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দেখা দেয়ায় গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

অপরদিকে, ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বদরুল আলম খান বলেন, “পূর্ব বিরোধের জের ধরে আদালতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন নাজমূলকে পিটিয়ে আহত করে। পরে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।”

তিনি আরো জানান, মৃত্যুর খবর পেয়েই এ মামলায় খুনের ধারা সংযোজনের জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email