‘বিএনপির একটি গঠনতন্ত্র আছে, ওটার কোনো খোঁজও পাওয়া যায় না’

প্রকাশিতঃ 7:02 pm | February 19, 2018

সিনিয়র রিপোর্টার, কালের আলো:

দুর্নীতিবাজদের দলে জায়গা দিতে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বিএনপির একটি গঠনতন্ত্র আছে, ওটার কোনো খোঁজও পাওয়া যায় না। বিএনপিতে সব ক্ষমতা চেয়ারম্যানের হাতে, আমাদের গঠনতন্ত্রে তা নেই। আমাকে যখন জেলে নিয়ে গেল আমি জিল্লুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করলাম। আমি আমার বোনকেও করিনি, ছেলেকেও করিনি।”

তিনি বলেন, “আর আমি কিছু বলতে চাই না। আমরা কিছু বললে তো অনেক দোষ।”

শেখ হাসিনা বলেন, “দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে কেউ তাদের দলে থাকতে পারবে না, তারা সেটা সংশোধন করে নিল। এটা ঠিক চেয়ারম্যান না থাকলে এক নম্বর ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান হবেন চেয়ারম্যান। কিন্তু তিনিও আবার ফেরারী আসামি। আমার প্রশ্ন বিএনপিতে কি এমন কোনো নেই, যাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা যেত। একটা লোক কি খুঁজে পাওয়া গেল না, যাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা যেত।”

রোম সফর শেষে ফিরে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে সংবাদ সম্মেলনে তার সঙ্গে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

খালেদা জিয়ার রায় এবং বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কোর্ট রায় দিয়েছে, আমাদের কিছু করার নেই। এরপরও দোষ আসে আমাদের উপর। দেখুন কোর্টের রায়ের আগে ৭ ধারা সংশোধন করে ইসিতে সাবমিট করেছে।”

সাংবাদিকদের মধ্যে শুরুতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কার কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড দেওয়ার ঘোষণার জন্য সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

আইনটি প্রণয়নের আগে উদ্বেগ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে শঙ্কার কথা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কেউ কোনো কিছু না করলে অপপ্রয়োগ হবে কেন। মালিক পক্ষ প্রতিনিধি পাঠাতে দেরি করায় ওয়েজ বোর্ড গঠনে দেরি হয়েছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “তিনটি সুখবর দিলাম; আরেকটি আছে, সেটা পরে দেব “ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে কার্গো বিমান পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ‘সুখবর’ও দেন শেখ হাসিনা। আগামী মার্চের যে কোনো সময় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে যাবে বলে সুখবর শোনান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফোর জি যুগে বাংলাদেশের যাওয়ার কথা জানান তিনি। একে তথ্য প্রযুক্তিতে ‘মাইলফলক’ অভিহিত করেন শেখ হাসিনা।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ বা অপসারণের কোনো যুক্তি নেই বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মন্ত্রী প্রশ্ন ফাঁস করে না, বা সচিবও প্রশ্ন ফাঁস করে না। তাহলে তাকে কেন যেতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নগুলা ফাঁস হচ্ছে পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা আগে। এই সময়ে প্রশ্ন পেয়ে তা দেখে মুখস্ত করে পরীক্ষায় লেখার মতো মেধাবী কে আছে, সেটাও জানতে চান তিনি।

পোপ ফ্রান্সিসের বৈঠকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট অবসানে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে ক্যাথলিক ধর্মগুরুকে আহ্বান জানানো হয়েছে।”

বক্তব্যে জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) কার্যক্রম এবং গভর্নিং কাউন্সিলের সভায় অংশগ্রহণের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

মোটামুটি ১০ মিনিটের মধ্যে লিখিত বক্তব্য শেষ করে শেখ হাসিনা রসিকতাচ্ছলে বলেন, ‘শেষ, এবার যাই তাহলে।”

 

কালের আলো/এসএ/ওএইচ

 

 

Print Friendly, PDF & Email