কক্সবাজারের চেহারা বদলে দিবে ‘রাজকীয়’ হোয়াইট সেন্ড রিসোর্ট

প্রকাশিতঃ 9:55 am | February 19, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

কক্সবাজারের কলাতলীতে গড়ে উঠছে দেশের সবচেয়ে আধুনিক ও বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল ‘হোয়াইট সেন্ড রিসোর্ট’। দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের আতিথেয়তার জন্য এখন পুরোদমে রিসোর্টটির নির্মাণযজ্ঞ চলছে। কলাতলী বিচের জৌলুস ফিরিয়ে আনতে এ রিসোর্টটিতে থাকছে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রের সব রকমের সুযোগ সুবিধা। ২০২১ সালের জুনে দেশের সবচেয়ে বড় এ রিসোর্টটির উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের ভাষ্য মতে, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৫’শতাধিক আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টে আন্তর্জাতিক মানের কোন শপিং মল কিংবা সিনেপ্লেক্স নেই। কিন্তু হোয়াইট সেন্ড রিসোর্টে আদি সিনেমা হলের আধুনিকতার মিশেলে পর্যটকদের জন্য থাকছে তিনটি সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ।

রিসোর্টের ভেতরেই থাকবে আন্তর্জাতিক মানের ৫ তলা শপিং কমপ্লেক্স। পুরো বিষয়টি স্বপ্নের মতো মনে হলেও আদতে দেশ-বিদেশী পর্যটকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই এমন ‘ভিশন’ নিয়েই এগুচ্ছে সংশ্লিষ্ট রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। সোহানা গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বৃহৎ এ রিসোর্টটির উদ্যোক্তা।

জানা যায়, প্রতি বছর কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে আসেন। পর্যটন মৌসুমে তাদের পদভারে আবার সৃষ্টি হয় আবাসন সংকট। পর্যটকদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের স্বনামধন্য সোহানা গ্রুপ কক্সবাজারের কলাতলীতে প্রায় ৬ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলছে পাঁচতারা হোটেল ‘হোয়াইট সেন্ড রিসোর্ট’।

এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রিসোর্টটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুরো কাজ শেষ করতে আরো বছর তিনেক সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজকীয় এ রিসোর্টটি অনেকটাই সমুদ্রের তীর ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে। রিসোর্টের লবিতে বসেই উপভোগ করা যাবে সমুদ্রের বিশালতা। কানে ভেসে আসবে তর্জন-গর্জন। এ রিসোর্টের বাণিজ্যিক অংশে থাকছে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সুপরিচিত ১০০টিরও বেশী শো-রুম। থাকছে তিনটি সিনেপ্লেক্স, ফুড কোর্ট, সোনা, স্পা, বিনোদন ক্লাবসহ নানান সুবিধা।

আবাসিক ও অনাবাসিক অতিথি এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য থাকছে দু’টি রেস্তোরা। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এখানকার একমাত্র ইনফিনিটি সুইমিং পুল ও অ্যামিউজমেন্ট জোন। থাকবে একসঙ্গে ২০০টি গাড়ি পার্কিং’র ব্যবস্থা।

সোহানা গ্রুপের কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যটন নগরীতে অনেক অত্যাধুনিক হোটেল-রিসোর্ট থাকলেও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পর্যটকদের নির্মল বিনোদন উপহার দিতে গড়ে উঠেনি কোন সিনেপ্লেক্স।

ফলে সন্ধ্যার পর পর্যটকদের হয় হোটেলের কক্ষে আবদ্ধ থাকা কিংবা বিচে পায়চারি করে অলস সময় কাটাতে হয় চোখে-মুখে রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রথমবারের মতো কোন রিসোর্টে থাকছে সিনেমা দেখার বাড়তি সুবিধা। থাকছে তিনটি সিনেপ্লেক্স। এর প্রতিটিতে ধারণক্ষমতা হবে ২’শ জনের।

স্বপরিবারে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বাচ্চা-কাচ্চার জন্যও ভাবনা-চিন্তা নেই বেশিরভাগ হোটেল বা রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের। এক্ষেত্রেও সচেতনতার পরিচয় দিয়েছে হোয়াইট সেন্ড রিসোর্ট। তারা রিসোর্টে গড়ে তুলবেন কিডস জোন। এখানে শিশুরা অনায়েসেই আনন্দের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠবে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, এ রিসোর্টে ৫৫০, ১১০০, ১৬০০ ও ২১০০ স্কয়ার ফিটের পেইন্ট হাউজ রয়েছে। প্রতি স্কয়ার ফিট বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। এখানকার প্রতিটি রেস্টুরেন্টে থাকবে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের খাবার। থাকবে অনেক ধরণের স্পা’র ব্যবস্থা। পরিকল্পনায় আছে, ইন্টারন্যাশনাল বার ও ক্যাফে। এছাড়া বৃহৎ হলরুমে দেশি-বিদেশী সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা তো থাকছেই।

হোয়াইট সেন্ড রিসোর্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ও সোহানা গ্রুপের পরিচালক ফারিয়া মাহবুব পিয়াশা কালের আলোকে বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের চেহারাকে পাল্টে দিতেই আমাদের রিসোর্টে থাকবে আধুনিক পর্যটনের সব আয়োজন।

দৃঢ়তার সঙ্গেই তিনি বলেন, এ রিসোর্টের মাঝেই সব রকমের সুযোগ সুবিধা পাবেন পর্যটকরা। দিনমান ঘুরাঘুরির পর সন্ধ্যায় প্রিয়জন নিয়ে কেনাকাটা কিংবা মুভি দেখার সুবিধাও থাকছে, যেটি অন্য কোন হোটেল বা রিসোর্টে নেই।

দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সোহানা গ্রুপের এ পরিচালক আরো জানান, এ রিসোর্ট করার পাশাপাশি আমাদের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে এখানকার প্রায় ১’শ বিঘা জমির ওপর একটি ভেকেশন সিটি করার। সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা এগুচ্ছি।

 

কালের আলো/এএ