শীতের তীব্রতায় গরম কাপড়ের কদর

প্রকাশিতঃ 7:38 am | December 08, 2024

রাইসুল ইসলাম খান, কালের আলো:

জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। তাপমাত্রা কমছে ক্রমশ। এরই মধ্যে দিয়ে শীতের আগমনী জানান দিয়েছে আবহাওয়া। শীতের প্রস্তুতিতে কদর বেড়েছে গরম কাপড়ের। রাজধানীর মার্কেট-শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাতে জমে উঠেছে জ্যাকেট, সোয়েটার, বাহারি চাদর, ফুলহাতা গেঞ্জি ও হুডিসহ নানান শীতের কাপড়ের পসরা। এসব দোকানে প্রতিনিয়ত ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। তবে অপেক্ষাকৃত কম দাম হওয়ায় ফুটপাতের দোকানগুলোয় ভিড় বেশি ক্রেতাদের। বিক্রিও তুলনামূলকভাবেই বেশি। রাজধানীর মিরপুর, গুলিস্তান, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেটসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত ও মার্কেট ঘুরে এমন দৃশ্য নজরে এসেছে।

শখ আর সাধ্যের সমন্বয়ে গরম কাপড় কেনাকাটায় বেশিরভাগ মানুষের গন্তব্য রাজধানীর গুলিস্তান এলাকা। পাইকারি ও ছোট-বড় খুচরা মার্কেটের পাশাপাশি, এই এলাকার ফুটপাতগুলোতে রয়েছে অসংখ্য শীতের কাপড় ও কম্বলের দোকান। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি নানা ডিজাইনের শীতের কাপড় ও কম্বলে সাজানো হয়েছে দোকান। ফুটপাতে ভিড় বেশি। গুলিস্তান মাজার মোড়ের পাশে ফুটপাতে বাচ্চাদের ফুলহাতা গেঞ্জি ও পাজামা বিক্রি করা একজন বলেন, ‘বড়দের চেয়ে বাচ্চাদের শীতের কাপড়ের ব্যবসা জমেছে বেশি। বেচাবিক্রিও তুলনামূলকভাবে বেশি।’

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল, মাফলার, মোজা, হুডি, ট্রাউজার, ডেনিম শার্টই বেশি মিলছে। এর মধ্যে সোয়েটার ও হুডিতে ফ্যাশন ও প্রয়োজন দুই চাহিদাই পূরণ করছেন তরুণ-তরুণীরা। আর অফিস কর্মী ও তরুণদের মধ্যে স্টাইলিশ জ্যাকেট, ব্লেজারের চাহিদা রয়েছে। অবশ্য মার্কেট ও ফুটপাতে রয়েছে পোশাকের দামের তারতম্যও। ফুটপাতে ৩০০-১০০০ টাকার মধ্যে সোয়েটার, হুডি পাওয়া গেলেও ব্র্যান্ড শপ ও মার্কেটে হুডি, জ্যাকেট ও ব্লেজারের দাম ১৫০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত চাইছেন বিক্রেতারা।

বরাবরের মতোই ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, গত বছরের তুলনায় একই ধরনের পোশাকের দাম এবার বেশি। তাই দরদাম করে ফুটপাত থেকে সাশ্রয়ী দামে কাপড় কেনার চেষ্টা করছেন। সামিউল নামের এক তরুণ ক্রেতা বলেন, গতবারের তুলনায় প্রতিটি হুডি বা জ্যাকেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি চাওয়া হচ্ছে। আবার শীত পড়ে যাওয়ার কারণে চাহিদা বেশি। সেজন্য ব্যবসায়ীরা দামও তাদের হাতে রাখছেন।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর শীতের মৌসুমে সারাদেশে ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার গরম কাপড়ের বাণিজ্য হয়। করোনার পর থেকে এই ব্যবসায় ভাটা পড়েছিল। এবার বেচাবিক্রি পুরোদমে শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা।

তাঁরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর গরম কাপড়ের দাম বেশি। এর কারণ হিসেবে আমদানি খরচ, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং ডলার রেটের তারতম্যকে দায়ী করছেন তারা। নিউমার্কেটের গ্লোব শপিং সেন্টারের রবিউল ইসলাম নামের এক বিক্রেতা বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে গরম কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে। আর সামনের দিনে শীত যত বাড়বে, গরম পোশাকের চাহিদাও তত বাড়বে। এখনই ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকান সব জায়গায় বেচাকেনা জমজমাট।

কালের আলো/আরআই/এমকে