বাজুস পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগে একাট্টা সমিতির সদস্যরা
প্রকাশিতঃ 9:00 pm | August 28, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) এর অকার্যকর পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সিটি করপোরেশনের মতো প্রশাসক নিয়োগ ও পরবর্তী সময়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাধারণ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সমিতির আগের কমিটির নেতারা। একই সঙ্গে তাঁরা জুয়েলারি শিল্পকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের হাত থেকে মুক্ত করারও জোরালো দাবি উত্থাপন করেছেন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে জুয়েলার্স সমিতির আগের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি করেন সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান। এ সময় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুস এর সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান অভিযোগ করে বলেন, জুয়েলারি ব্যবসা না থাকার পরও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর জোর করে সমিতির সদস্যপদ নেন। এমনকি বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের নামে সদস্যপদ নেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত সেটি চালু হয়নি। সদস্যপদ নেওয়ার পর প্রভাব খাটিয়ে ভোট ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে সমিতির সভাপতির পদ দখল করেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। সমিতির গঠনতন্ত্র ও বাণিজ্য সংগঠন নীতিমালা লঙ্ঘন করে টানা দুই মেয়াদে সভাপতি পদে আছেন তিনি।
এনামুল হক খান দাবি করেন, গত ২০২১-২০২৩ মেয়াদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে তাঁদের চা খেতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান। ওই সময় তাঁদের বাজুসের সভাপতি পদে নির্বাচন না করা ও আনভীরকে বাজুসের সভাপতি করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, সমিতির গঠনতন্ত্র ও বাণিজ্য সংগঠন নীতিমালা লঙ্ঘন করে সায়েম সোবহান তাঁর আজ্ঞাবহ একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। সাধারণ প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম কেনার সুযোগ না দিয়ে তিনি নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন। পরের মেয়াদেও সায়েম সোবহান একই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করেন।
এনামুল হক খানের আরও অভিযোগ, সমিতির সভাপতি সায়েম সোবহান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দর উপেক্ষা করে সোনার দাম নির্ধারণ করেছেন। এতে সোনার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। পাশাপাশি মারাত্মক প্রভাব পড়ে বেচাকেনায়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তিনি বলেন, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে আপনাদেরকে জানাই রক্তিম শুভেচ্ছা। আমরা গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে জুয়েলারী ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ এই সময়ে আমরা আপনাদের ও সাধারণ জুয়েলারী ব্যবসায়ীদের ভালোবাসা ও সমর্থনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) দ্বায়িত্ব পালন করেছি। বাজুসে এই দীর্ঘ সাংগঠনিক ক্যারিয়ারে আমরা সংগঠনের গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে প্রতিপালন করে সাধারণ জুয়েলার্সদের স্বার্থ সমুন্নত রেখেছি। নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জুয়েলার্সদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। সময় এসেছে আপনাদের সাথে নিয়ে জুয়েলারী শিল্পকে অশুভ চক্রের হাত থেকে মুক্ত করার।
সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে সাধারণ জুয়েলার্সদের বলতে চাই, আমরা ওয়াদা করছি নিজেদের জান ও মাল দিয়ে আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমাদের আলাপ হয়েছে তারা আমাদের সকল ধরণের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত। আসুন চুপ না থেকে আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, রুজি-রটির কথা ভেবে এই অশুভ চক্রের হাত থেকে জুয়েলারী শিল্প মুক্ত করি।
কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ