আ.লীগ নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন

প্রকাশিতঃ 7:19 pm | June 16, 2024

কালের আলো রিপোর্ট:

আগামীকাল সোমবার (১৭ জুন) বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব এটি। সব মুসলমানই দিনটি পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে কাটাতে চান। রাজনীতিকরা পরিবারকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি এদিন দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারাও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে থাকেন। যে কারণে তাদের রাজনীতি রাজধানীকেন্দ্রিক হলেও ঈদের সময় চেষ্টা করেন নিজ নিজ এলাকায় যেতে।

এবারের কোরবানির ঈদেও নিজ এলাকায় গিয়ে অবস্থান করবেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদের জামাত শেষে নিজ এলাকায় যাবেন। আবার কেউ কেউ আগেই এলাকায় গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করে বিকালে ঢাকায় ফিরবেন। সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যরাও নির্বাচনি এলাকায় যাচ্ছেন। তারা সবাই স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ উদযাপনের বিষয়টি নেতাদের জন্য একটি স্বাভাবিক রুটিনে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু না থাকলে প্রতিবারই একইভাবে ঈদ উদযাপন করে থাকেন তারা। অর্থাৎ কোনও কোনও নেতা প্রতিবছরই এলাকায় ঈদ করেন। আবার কেউ কেউ ঈদ করেন ঢাকায়। এক্ষেত্রে যারা ঈদের দিন ঢাকায় থাকেন তারা ঈদেরে আগে বা পরে এলাকায় গিয়ে জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ বা এমপি-মন্ত্রীরা নিজস্ব বা সরকারি ফান্ডের মাধ্যমে ঈদের আগেই নির্বাচনি এলাকার গরিব, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করে থাকেন। তবে নির্বাচনি বছরে এলাকায় ঈদ উদযাপনের যে হিড়িক পড়ে যায়, অন্যবার তাতে কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে।

অন্যান্য সময়ের মতো এবারও নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার ঈদুল আজহার দিন সকাল সাড়ে ৯টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

এবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকায় ঈদ করবেন। অন্যবারের মতো রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ বাসায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি ঈদের একদিন পর নির্বাচনি এলাকায় যাবেন। উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য তোফায়েল আহমেদ ঈদ করবেন ঢাকায়। তোফায়েল আহমেদ সবসময় গ্রামের বাড়িতে ঈদ করে এলেও করোনার পর থেকে এবং গত দুই বছর ধরে শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় গ্রামে যেতে পারেন না। তবে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এলাকার জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন।

নিজ এলাকা ফরিদপুরে ঈদ করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান ঢাকায় ঈদ করবেন।

নির্বাচনি এলাকা টাঙ্গাইলে ঈদ উদযাপন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক। ঢাকায় ঈদ করবেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। বরাবরই ঢাকায় ঈদ করেন ঢাকা-২ আসনের এই এমপি। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম নিজ এলাকা চাঁদপুরে ঈদ করবেন।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ঈদ করবেন ঢাকায়। ঈদের পরের দিন নিজ নির্বাচনি এলাকা মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

কুষ্টিয়ায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ঈদ করবেন ঢাকায়। ঈদের নামাজ শেষে বাহাউদ্দিন নাছিম নিজ জেলা মাদারীপুরে যাবেন এবং বাবা-মায়ের করব জিয়ারত করবেন। বাহাউদ্দিন নাছিম আগে মাদারীপুরের এমপি থাকলেও এবার তিনি ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি নিজ এলাকা চাঁদপুরে ঈদ কবেন।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ঢাকায় ঈদ করবেন বিএম মোজাম্মেল হক ও এমএম কামাল হোসেন। ঈদের দিন বিকালে নিজ নির্বাচনি এলাকা খুলনায় যাবেন কামাল হোসেন। নির্বাচনি এলাকায় ঈদ করবেন আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। আর দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ঈদ করবেন চাঁদপুরে।

কুমিল্লায় নিজ নির্বাচনি এলাকায় ঈদ করবেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর। চট্টগ্রামের নিজ এলাকায় ঈদ করবেন দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। অনেকে আবার ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে এলাকায় যাবেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে নির্বাচনি এলাকা থেকে ঘুরে এসেছেন।

কালেরআলো/ডিএইচ/কেএ