পুরস্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টার মিথ্যাচার করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 9:08 pm | March 28, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পুরস্কার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে যে ইউনেস্কো ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পুরস্কার দিয়েছে। আসলে এটি ইউনেস্কোর কোনও পুরস্কার নয়। এটি আজারবাইজানের বাকুতে ইউনেস্কো সংশ্লিষ্ট একটি সম্মেলনে মিজ হেথবা সের নামে একজন ভাস্কর, যিনি ইসরাইলি, তিনি একটি পুরস্কার দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল, কিন্তু কোনোভাবেই এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে সেখানে দেওয়া হয়েছে। যেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে। এটি মিথ্যা। অপপ্রচার করা হয়েছে। এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এটি প্রথম নয়, বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন।
মন্ত্রী বলেন, তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু গাজায় আজ নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এটি নিয়ে তিনি একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি বা প্রতিবাদ করেননি।
সম্প্রতি ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েব পেজে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো’র ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার দেওয়া হয়। তারা উল্লেখ করে, গত ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরামে ড. ইউনূসকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু ইউনেস্কো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসের ইউনেস্কো সদর দফতর এই বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়। ১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এই সম্মাননা দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে সেখানে ইউনেস্কোর কোনো অফিসিয়াল প্রতিনিধিত্ব ছিল না। আর ইউনূস সেন্টারের দাবি করা সম্মাননা ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়। ড. ইউনূসকে ‘ট্রি অব পিস’ নামে একটি ভাস্কর্য স্মারক দেন ইসরাইলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের।
বুধবার এক বিবৃতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) এ তথ্য জানায়। তারা বলে, ইউনূস সেন্টারের এই প্রচারণা প্রতারণামূলক ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার।
সীমান্তহত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
এ সময় ২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে ফ্ল্যাগ মিটিংও হয়েছে, জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন অনেকদিন ধরেই আমরা ভারতের সাথে এ বিষয়টি আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ বিষয়টি নিয়ে আমি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হয় কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসা।
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা ও যোগাযোগ অব্যাহত
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহজকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি এবং আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার করা এবং জাহাজ উদ্ধার করা। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, ওই জাহাজে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিনমাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না, এখানেও নেই।
কালের আলো/ডিএস/এমএম