দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু স্থিতিশীল
প্রকাশিতঃ 4:49 pm | March 24, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু স্থিতিশীল রয়েছে। ২০২৩ সালে জন্মের সময় প্রত্যাশিত এ হার দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৩ বছর বা ৭২ বছর ৩ দশমিক ৬ মাস। যেটি ২০২২ সালের জরিপেও একই ছিল। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। এক্ষেত্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব এক হাজার ১৭১ জন। প্রতি হাজার জনসংখ্যার স্থুল জন্মহার ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থুল মৃত্যুহার ৬ দশমিক এক শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের মধ্যে প্রথম হলো হৃদরোগ, এতে মৃত্যু হার এক দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। দ্বিতীয় কারণ হলো মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, এতে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪ দশমিক ২ বছর এবং নারীদের ১৮ দশমিক ৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লীতে আগমনের হার ২০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ৬ দশমিক ৬১ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৭৮ জন। আন্তর্জাতিক আগমন বা বহিরাগমন প্রতি হাজারে ২ দশমিক ৯৭ থেকে কমে হয়েছে ২ দশমিক ৩৭ জন। ২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
খানার (পরিবার) আকার ২০২২ সালে ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে, যা ৪ দশমিক ২ জন। তবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানা প্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এটি ছিল ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অপরদিকে পুরুষ খানা প্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে এ হার হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৮১ দশমিক এক শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৫৩ শতাংশে। সাত বছর ও তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার মধ্যে সাক্ষরতার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ১৫ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
এছাড়া শিক্ষা, কর্মে বা প্রশিক্ষণে নেই এমন তরুণদের সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে ৩৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২২ সালে ছিল ৪০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পাঁচ অধিক বয়সী মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী জনসংখ্যার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৫৯ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে ১৫ বছরের অধিক বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৩ দশমিক ৮) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ১৫ বছরের অধিক বয়সীদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৫০ দশমিক এক শতাংশ।
বিবিএস’র মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থানপন করেন এসভিআরএস ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রকল্পের পরিচালক আলমগীর হোসেন। আরও বক্তব্য দেন বিবিএস’র ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড হেলথ উইংয়ের পরিচালক মাসুদ আলম এবং প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ববস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপংকর রায়।
কালের আলো/এমএইচ/এসবি