আনসারকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়নি, হবেও না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 6:05 pm | October 25, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা কখনোই দেওয়া হয়নি এবং হবেও না বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেছেন, আপনারা একটি ভুল ধারণা থেকে এই ধরনের প্রশ্ন করছেন। আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের অনুমতি কখনোই দেওয়া হয়নি। আজও দেওয়া হবে না, কোনো আইন দ্বারা দেওয়ার ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমাদের ফৌজদারি আইনের কার্যবিধি রয়েছে, তার ভেতরে থেকেই সমস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ করতে হবে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনটি বর্তমানে স্থায়ী কমিটিতে রয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এখানে কোনো শব্দ যদি প্রশ্নের অবতারণা করে, তাহলে সেগুলো তারা সংশোধন করবেন। এখানে প্রচলিত আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো বাহিনীরই আমাদের প্রচলিত ফৌজদারি যে আইন রয়েছে সেটি মেনেই কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি কথাই স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি, এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। শুনতে পাচ্ছি, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং মিডিয়াতে সংবাদ হচ্ছে, আনসার পুলিশের ক্ষমতা নিয়ে যাচ্ছে, এগুলো এক ধরনের প্রোপাগান্ডা। এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। দুটি বাহিনীই আমাদের জাতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। আইনশৃঙ্খলার মূল যে আইন, তার বাইরে কেউ নয়।

ঢাকার পথ আমরা বন্ধ করব না
আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ঢাকার প্রবেশ পথ বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় প্রবেশ পথ আমরা কেন বন্ধ করব? ব্যবসায়িক ও চাকরিসহ বিভিন্ন কাজে লোকজন ঢাকায় আসেন। পদ্মাসেতু হওয়ার কারণে অফিস-আদালত করা লোকজনও ঢাকায় আসেন। কাজেই ঢাকার পথ কেন আমরা বন্ধ করব? ঢাকার পথ আমরা বন্ধ করব না, তারা যদি শান্তিপূর্ণভাবে নির্দিষ্ট স্থানে সমাবেশ করে চলে যায়, আমাদের কোনো কথা নেই, আমরা সেখানে কোনো বাধা দেব না।’

জামায়াতে ইসলামী সভা-সমাবেশ করতে চাচ্ছে, তাদের অনুমতি দেওয়া হবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক দলমত আছে। জামায়াত এর আগেও দুয়েক জায়গায় আলোচনা করেছে। দেশের নিয়ম-কানুন মেনে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে যে কেউ যে কোনো কথা বলতে পারে। জামায়াত বলতে কোনো কথা নেই। দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা আছে। আমাদের কথা হলো, আইন-কানুনের মধ্যে থেকে তারা কথা বলতে পারেন।’

জামায়াতকে সভা-সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে পারমিশন (অনুমতি) দিইনি। স্পষ্টভাবে জানা উচিৎ—আমরা কাউকে পারমিশন দিইনি। জামায়াতে ইসলাম এখন পর্যন্ত কোনো নিবন্ধিত দল নয়, কাজেই তারা যদি জামায়াতে ইসলামের ব্যানারে আসে, তাহলে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

বিএনপির সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন কীভাবে করেছেন, তা পুলিশ কমিশনার জানেন। তারা এত লোক, সারা বাংলাদেশের যারা বিএনপি করে—তাদের সবাইকে ঢাকায় আনবেন। কোথায় তাদের সমাবেশের অনুমতি দিলে ভালো হবে। এছাড়া এত লোক ঢাকায় এলে একটা অন্য ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এজন্য তাদের কোথায় সমাবেশ করতে দেওয়া হবে এটা পুলিশ কমিশনার বুঝবেন। সেইভাবে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ হচ্ছে। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার এমন কিছু না যে ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। এটা গণতান্ত্রিক সরকার, কাজেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। ধাক্কা দিলে সরকার পড়ে যাবে—এমন কথা সংবিধানে লেখা নেই।’

কালের আলো/এসবি/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email