ডেডলাইন ২৮ অক্টোবর : নিরাপত্তা শঙ্কা ও জনমনে আতঙ্ক

প্রকাশিতঃ 10:53 pm | October 21, 2023

কালের আলো রিপোর্ট :

আগামী ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ও সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সেই থেকে জনমনে তৈরি হয়েছে নানা শঙ্কা। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবর? যদিও বিএনপি’র এই চূড়ান্ত আন্দোলনকে তেমন পাত্তা দিচ্ছে না সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে তাঁরা দলটির তৎপরতা ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ২৮ অক্টোবর বিএনপির পরিণতি ১০ ডিসেম্বরের মতো হবে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর তারা গোলাপবাগ গরুর হাটের খাদে পড়েছিল, এবার কোথায় যাবে, সেটা দেখার অপেক্ষায়।

এই কর্মসূচিকে ঘিরে একটি নিরাপত্তা শঙ্কা ও জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপি’র কর্মসূচির আড়ালে কোন সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমনের ঘোষণা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।শনিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরায় উত্তর মেট্রো স্টেশনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান সাফ সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন, মিছিল মিটিং সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা কর্মসূচির আড়ালে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে দমন করবে।

জানা যায়, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা বলছে দলটি। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। সেই মুহূর্তে এই মহাসমাবেশ থেকেই বিএনপি ঢাকায় লাগাতার অবস্থান নেওয়া বা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিতে পারে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দলটির নেতাকর্মীদের গতিবিধি ও তৎপরতা পর্যবেক্ষণে রাখছে সরকার ও আওয়ামী লীগ।

সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, এক দফা আন্দোলন নিয়ে বিএনপি আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এ কারণেই একের পর এক আল্টিমেটাম দিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনকে যেভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে দলটির, তাদের সেই শক্তি-সামর্থ্য নেই। তবে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত অতীতের মতো সহিংসতা, সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করতে পারে বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কা রয়েছে।

এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও দলের নেতাকর্মীরা কঠোর অবস্থানে থাকবে। পাশাপাশি বিএনপির গতিবিধি কি হবে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কোনো পরিকল্পনা আছে কি না সে দিকেও লক্ষ্য রাখছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। কারও দিক থেকে সন্দেহজনক কোনো তৎপরতার তথ্য পাওয়া পেলে তার বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে বলে সূত্রগুলো জানায়।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করছে ঠিক আছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে মানুষের জানমালের ক্ষতি করলে, অগ্নিসন্ত্রাস করলে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সে ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে আমি তাদের বলে দিয়েছি।

শনিবারও (২১ অক্টোবর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আন্দোলন করলে সমস্যা নেই। কিন্তু কেউ আগুল সন্ত্রাস করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আন্দোলনের নামে বিএনপি মাঠে নামতে চায়, তারা আন্দোলন করুক, এ নিয়ে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু তারা আবার কোনো রকম অগ্নিসন্ত্রাস বা ধ্বংসাত্মক কাজ করলে এবং কোনোরকম দুর্বৃত্তপনা করলে ছেড়ে দেব না। তারা যেন আর আগুন সন্ত্রাস করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।

কালের আলো/এমএএএমকে