অনুসন্ধানী সাংবাদিক রিমনের চোখে ৩২ ধারা

প্রকাশিতঃ 6:43 pm | February 05, 2018

কালের আলো ডেস্ক :

তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে কম তর্ক-বিতর্ক হয়নি। শেষ পর্যন্ত ওই ধারাটি বিলুপ্ত হলেও নতুন ডিজিটাল আইনের ৩২ ধারা রীতিমতো গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে সংবাদকর্মীদের জন্য। বলা হচ্ছে, নতুন এ আইন স্বাধীন সাংবাদিকতাকে সংকুচিত করবে।

সংবাদকর্মীদের টার্গেট করেই এ ধারাটি করা হয়েছে বলে মনে করছেন মিডিয়া কর্মীরা। এ ধারার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ধারা নিয়ে নিজের একটি মতামত তুলে ধরেছেন দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত সাইদুর রহমান রিমন। দেশের জনপ্রিয় সর্বাধিক প্রচার সংখ্যার দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ সিনিয়র রিপোর্টার ৩২ ধারাতেও যে সাংবাদিকতার জন্য ফাঁক রয়েছে সেটি বলেছেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার অতিগোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল যন্ত্র, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহলে সেই কাজ হবে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে।’

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অনেক পুরস্কার জেতা ডাকসাইটে এ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিখেছেন, আইনের এ ধারা নিয়েই মিডিয়া পাড়ায় উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকগণ আরো বেশি চিন্তিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু বৃটিশ আমল থেকেই যাবতীয় আইন কানুন কেবলমাত্র তথ্য উপাত্ত গোপনীয়তার বেড়াজালে আটকে রাখার রক্ষাকবচ হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
এমন কোনো আইনে বলা হয়নি-সাংবাদিকদের সকল ধরনের গোপনীয় তথ্য চাহিবামাত্র প্রদান করতে হবে। তাহলে সকল প্রতিকুলতা আর আইনি বেড়াজাল ছিন্ন করেই বিভিন্ন কৌশলে সাংবাদিকদের প্রকৃত তথ্য ফাঁস করে জনসাধারণকে জানিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এবার ৩২ ধারার ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়ারও পথ আবিস্কার করাটাই বোধহয় বেশি জরুরি।’

দেশের অপরাধ জগতের আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ সংবাদকর্মী সাইদুর রহমান রিমন মনে করেন, ৩২ ধারা সংক্রান্ত একটি প্রশ্নই আমার মনে এসেছে। ‘আমি যদি আইনিভাবে অনুমতি নিয়ে কোনো সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত অফিসে প্রবেশ করে এরপর নিজের ইচ্ছেমত ছবি, ভিডিও, কম্পিউটার তথ্যাদি সংগ্রহ করে ছাপাই তাহলেও কি আমি গুপ্তরচর হিসেবে আখ্যায়িত হবো?
কারণ, আমি তো অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে আইন পালন করলাম- ধারায় তো আর বলা হয়নি যে, আইনিভাবে প্রবেশ করে অনুমতি সাপেক্ষে ছবি ভিডিও নিতে হবে।’

Print Friendly, PDF & Email