দায়িত্ব না নিতে পারলে আমাদের ওপর ছেড়ে দেন : মেয়র আতিক

প্রকাশিতঃ 5:20 pm | December 07, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকার খাল, জলাশয় ও ডোবায় মশার চাষ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিমানবন্দরের কুর্মিটোলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।

ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দরের আশপাশের বড় ডোবাগুলোর মালিক সিভিল এভিয়েশন বা কোনো সংস্থা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব ডোবানালা পরিষ্কার করে দিলে সিটি করপোরেশন সেখানে ওষুধ ছিটিয়ে দেবে। কিন্তু ডোবাগুলো কেউ পরিষ্কার করছে না।

ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, সিভিল এভিয়েশনসহ সংস্থাগুলো যদি এসব জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারে তাহলে তা সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিক। দায়িত্ব যদি নিতে না পারেন আমাদের ওপর ছেড়ে দেন। আমরা এখানে কোনো আবর্জনা, ময়লা রাখব না। কিন্তু মালিক যদি সিভিল এভিয়েশন, রাজউক, রেলওয়ে বা গণপূর্ত হয়, তাহলে এসব ডোবানালা পরিষ্কারের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।

কাওলায় সিভিল এভিয়েশনের জায়গায় ‘মশার চাষ’ হচ্ছে মন্তব্য করে আতিকুল ইসলাম বলেন, এখান থেকে মশা উড়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছে। খবরে বারবার দেখানো হচ্ছে মশার কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি। বিমানবন্দরের চারপাশের দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশনের। যেখানে কচুরিপানা পরিষ্কার করা আছে সেখানে আমরা ওষুধ দিয়ে দেব। কিন্তু যেখানে কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি সেখানে স্প্রে করব কীভাবে?

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতেই মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীনে। সরেজমিনে এসে দেখলাম এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি করপোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব নয়। সব সংস্থাকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। সংস্থাগুলোকে নিজেদের অধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে হবে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ না করলে খাল ও জলাশয় থেকে মশা নিধন খুব দুরূহ কাজ। সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে এটি সম্ভব না। আমরা বারবার বলেও ব্যর্থ হচ্ছি। বারবার বলা শর্তেও কেউ কর্ণপাত করছে না। এটি একজন আরেকজনকে দোষারোপ করার বিষয় নয়। সব সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে তাহলেই সমাধান সম্ভব।

ডিএনসিসির মেয়র বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে। তাতে সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড অংশ নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার যার জায়গার কচুরিপানা নিজেরা পরিষ্কার করবে। সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সিভিল অ্যাভিয়েশনের জায়গা আপনারা নিজেরা পরিষ্কার করে দেন। সিভিল অ্যাভিয়েশন পরিষ্কার করতে না পারলে ওই জায়গা আমাদের দিয়ে দিক। আমরা পরিষ্কার করে নেবো।

‘খাল তো আমরা পরিষ্কার করেছি। আগে কী অবস্থা ছিল আপনারা দেখেছেন। জায়গার দায়িত্ব না নিতে পারলে কাগজে রেজিস্ট্রি করে দেন। আমরা পরিচ্ছন্ন রাখবো। যে জায়গায় বা জলাশয়ে কচুরিপানা নেই, সেখানে আমরা মশার ওষুধ স্প্রে করে দেবো। কিন্তু যেখানে কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি, সেখানে স্প্রে করবো কীভাবে?’

এসময় মেয়র সিভিল অ্যাভিয়েশন ও রাজউকের প্রতিনিধিদের সাতদিনের মধ্যে জলাশয়ের সব কচুরিপানা পরিষ্কার করার আহ্বান জানান। সাতদিনের মধ্যে কচুরিপানা পরিষ্কার না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

কালের আলো/এসবি/এমএম