কাজে যোগ দিলেন শ্রমিকরা, প্রাণ ফিরেছে চা বাগানে
প্রকাশিতঃ 1:03 pm | August 28, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা শিল্প মালিকদের বৈঠকে দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণের পর চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া, ভুরভুরিয়া ও খাইছড়া চা বাগানে শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সভাপতি নাছিম আহমদ বলেন, চা বাগানের ১৫০ বছরের ইতিহাসে কখনো একাধারে ১৯ দিন আন্দোলন হয়নি। অতিতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এমনটা হয়েছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে মজুরি বৃদ্ধি। একসঙ্গে ৫০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির ইতিহাস এই প্রথম। সব মিলিয়ে প্রধান মন্ত্রীর এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য ঐতিহাসিক স্মারক।
একই উপজেলার করিমপুর চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ চা শ্রমিক জামাল খান (৭০) বলেন, আমার জীবনে কোনো দাবি দাওয়া নিয়ে এত দীর্ঘ সময় আন্দোলন হয়নি এবং এত বেশি মজুরি বৃদ্ধি হয়নি। এটা আমাদের কাছে সত্যিই ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা আলোচনা করেছেন। চা শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেছেন তিনি। আমরা তা মেনে নিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। প্রত্যেক বাগানের শ্রমিকদের কাজে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সবাই কাজে যাচ্ছেন। আজ চা বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। এ কারণে কিছু বাগানের শ্রমিকরা কাজে নাও যেতে পারেন। আগামীকাল সোমবার থেকে শতভাগ শ্রমিক কাজে যোগ দেবেন।’
ভাড়াউড়া চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক গৌতম দেব বলেন, ‘শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। যদিও আজ রবিবার বাগান সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তবে এবার চা শ্রমিকরা মানসম্মত মজুরি পেয়ে খুশি।’
প্রসঙ্গত, ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও ১৩ আগস্ট থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে আসছিলেন চা শ্রমিকরা। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও সেটা মানছিলেন না অনেকে।
চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নির্ধারণে শনিবার (২৭ আগস্ট) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৩ জন চা শিল্প মালিকের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে গণভবনের গেটে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস গণমাধ্যমকে বলেন, চা শ্রমিকদের আশা প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে মালিকদের সঙ্গে কথা বলে মজুরি বাড়াবেন। সেটাই তিনি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী রবিবার থেকে সবাইকে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শিগগিরই চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করবেন।
কালের আলো/বিএস/এমএম