নতুন শিক্ষাক্রম হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 10:38 am | August 03, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তি হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তার ওপরে ভিত্তি করে যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনষ্ক ও মানবিক সৃজনশীল মানুষ হয়। বাংলাদেশ যে চেতনা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সেই অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনা যেন ধারণ করে শিক্ষার্থীরা বড় হতে পারে তার উপযোগী করেই নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকেলে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী লিখিত এবং মানসী কায়েস ও ফারাহ নাজ অনুদিত ‘ড. আলিম : আ মারটায়ার অব ১৯৭১’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে জেনে, বাঙালি হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানব হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অনেক কথা আছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে পাঠ্যপুস্তকে বিকৃতি ঘটেছে। সেগুলো ঠিক করতে গিয়ে কিছুটা ঠিক হয়েছে, অনেক কিছু ভুল থেকে গেছে। যে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে বইয়ের কাজগুলো হয় সে প্রক্রিয়াগুলোই মূলত বেশ ত্রুটিযুক্ত ছিল। সে কারণেই কখনোই আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলো নিয়ে আমরা খুব খুশি থাকতে পারিনি। সে কারণে নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তকে আমরা চেষ্টা করেছি যতদূর সম্ভব কোনো ধরনের ভুলক্রুটি ও বিকৃতি না থাকুক।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণ হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বাইরে জানানো হয়নি, যা জানানো হয়েছে তা অসম্পূর্ণ, বিকৃত। আবার কোথাও কোথাও গণহত্যার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমরা চেয়েছি বাংলাদেশের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।

বই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা দেশে ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস বিকৃত করেছে। দেশের বাইরে গিয়েও তাদের সর্বস্ব দিয়ে, অর্থ দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে ইতিহাস বিকৃত করছে। এর কারণ আমাদের ইতিহাস নিয়ে ইংরেজি তেমন কোনো বই নেই। এই বইটি ইংরেজি ভাষায় হওয়ায় বিশ্বে আমাদের সঠিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা সহজ হবে। এটি একজন শহীদ জায়ার নিজের অভিজ্ঞতা, নিজের দুঃখ-কষ্ট, নিজে যা দেখেছেন, বোধ করেছেন সেগুলো নিয়েই লেখা। আমি যতটুকু পড়ার সুযোগ পেলাম আমার কাছে মনে হয়েছে এটি সঠিক ইতিহাসভিত্তিক বই এবং খুবই সুন্দর ভাষায় লেখা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী। এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোদাচ্ছের আলী। এছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, সংসদ সদস্য এ্যারোমা দত্ত। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- বাতিঘর প্রকাশক জাফর আহমেদ রাশেদ, বইয়ের অনুবাদক ফারাহ নাজ।

কালের আলো/এমএইচ/এসবি

Print Friendly, PDF & Email