এবার বাংলাসহ ১৪ ভাষায় সম্প্রচার হবে হজের খুতবা

প্রকাশিতঃ 12:54 pm | July 02, 2022

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

পবিত্র হজের খুতবা এবার বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় সৌদি আরবের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাইভ অনুবাদ সম্প্রচার হবে। আরও বেশি শ্রোতার কাছে সংযম ও সহনশীলতার বার্তা পৌঁছে দিতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরব সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে শনিবার (২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী শুক্রবার (৮ জুলাই) আরাফাত দিবসে মক্কার নামিরাহ মসজিদ থেকে হজের খুতবা দেওয়া হবে। আরবিতে দেওয়া মূল খুতবার পাশাপাশি সৌদি আরবের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাইভ অনুবাদ সম্প্রচার করা হবে।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের নেতৃত্ব সর্বাধিক সংখ্যক সম্ভাব্য শ্রোতাদের কাছে সংযম ও সহনশীলতার বার্তা দিতে চায়। মূলত এজন্যই অনুবাদ আকারে হজের খুতবা সম্প্রচারের জন্য ১৪টি ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

দুই পবিত্র মসজিদ বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি আবদুল রহমান আল-সুদাইস বলেছেন, সৌদি নেতৃত্ব মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববীর পরিষেবার উন্নয়নে অন্তহীন সহায়তা দিচ্ছে।

আরাফাত দিবসের খুতবার লাইভ অনুবাদ পঞ্চম বছরে পদার্পণ করছে বলেও জানান তিনি। এই লাইভ অনুবাদ প্রকল্প সহিংসতা, চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বলেও জানান আল সুদাইস।

তিনি বলেন, এই খুতবা প্রাথমিকভাবে দুইটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। পরে পর্যায়ক্রমে পাঁচ ও ১০টি অনুবাদ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এবার ১৪টি ভাষায় অনুবাদ আকারে খুতবা সম্প্রচার করা হবে।

গত বছর ইংরেজি, ফরাসি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, রুশ, চীনা, বাংলা, তুর্কি ও হাউসা ভাষায় অনুবাদ আকারে খুতবা সম্প্রচার করা হয়েছিল। এবার সে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হওয়া চার ভাষা হচ্ছে স্প্যানিশ, ভারতীয়, সোয়াহিলি ও তামিল।

আল সুদাইস বলেন, সৌদি নেতৃত্ব হজযাত্রী ও দর্শনার্থীদের সেবা করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বকে ইসলামের সংযম ও সহনশীলতার বার্তা পৌঁছে দিতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, বাদশাহ সালমান হজযাত্রীদের যত্ন নেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং সৌদি আরব সব সময় সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে এই কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য গর্ববোধ করবে।

আল সুদাইস বলেন, অনুবাদ প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো বিশ্বকে ন্যায়পরায়ণতা, ন্যায়বিচার, সহনশীলতা এবং মধ্যপন্থী ইসলামের বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

তিনি বলেন, মানবাধিকার ও ইসলামের শিক্ষার পাশাপাশি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

করোনা মহামারির পর এবারই প্রথমবারের মতো বিদেশি হজযাত্রীদের স্বাগত জানাচ্ছে সৌদি আরব। দেশটির হজমন্ত্রী মোহাম্মাদ আল-বিজাওয়ী রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন আল-এখবারিয়াকে বলেছেন, ‘মহামারির কারণে দুই বছরের বাধার পর দেশের বাইরে থেকে অতিথিদের গ্রহণ করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।’

এর আগে ২০১৯ সালে পবিত্র হজ পালনে সৌদিতে জড়ো হয়েছিল সাড়ে ২৫ লাখ মুসল্লি। সে বছরের শেষ দিকেই চীনের উহানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দুনিয়াজুড়ে এটি ছড়িয়ে পড়ে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০২০ সালে মাত্র এক হাজার মুসল্লি নিয়ে হজের আয়োজন করে সৌদি সরকার।

করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসায় এবার বিদেশিদেরও হজ পালনের অনুমতি দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ বছর মোট ১০ লাখ মানুষ হজে অংশে নিচ্ছেন। এদের মধ্যে সাড়ে ৮ লাখ বা ৮৫ শতাংশই বিদেশি। আর দেড় লাখ সৌদির নাগরিক। হজে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ওমরাহ ও হজ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সৌদি আরবের অন্যান্য এজেন্সিগুলোও কাজ করে যাচ্ছে।

কালের আলো/এসবি/এমএম