ভূমিদস্যু ও দখলদারিত্বে অতিষ্ঠ গাজীপুরের ছায়াবীথিবাসী

প্রকাশিতঃ 5:02 pm | May 16, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

গাজীপুর শহরের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকায় নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এসব ভূমিদস্যু ও দখলদারিত্বের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গাজীপুরের এ এলাকার মানুষ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রভাবশালী চক্রটি রাতের আঁধারে বিভিন্ন জনের জমিতে বালি ফেলে ভরাট করে নিজেদের নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাতের আঁধারে ইট-বালি এনে ঘর তৈরি করা হচ্ছে। বাধা দিতে গিয়ে হুমকি-ধমকি ও নানা ধরনের বিপদে পড়ছেন প্রকৃত মালিকরা। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা আদালতের দারস্থ হলেও তার তোয়াক্কা করছে না চক্রটি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চক্রটি এসব কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ কারণে জমি বেহাত হওয়া নিয়ে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

এমনই একজন ভুক্তভোগী ফরিদা পারভীন। গুরুতর অসুস্থ ফরিদার পক্ষে তার ছোট ভাই শাহীনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জয়দেবপুর মৌজার দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকায় একটি চক্র বিভিন্ন জনের অন্তত ১৬০ শতাংশ জমি জবর দখল করে নিয়েছে। তার মধ্যে শাহীনুলের বড় বোন ফরিদা পারভীনের ৩ কাঠা জমি ছিল। চক্রটি রাতের আঁধারে ফরিদা পারভীনের সেই জমিতে ইট-বালু এনে ঘর তৈরি করছিল। বাধা দিলে উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে হামলার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে থানার ওসির কাছে গেলেও তিনি তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নেননি। উল্টো আদালতের দোহাই দিয়ে তার কিছু করার নেই বলেও জানান।

এদিকে একই রকম ভুক্তভোগী মাহবুবা ইয়াসমিন, সারোয়ার হোসেন, পলাশ সাহা ও মুক্তারা খাতুন বাদী হয়ে এরই মধ্যে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের দারস্থ হলে শুনানি শেষে আদালত সেখানে স্থাপনা নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অমান্য করেই চক্রটি নানা স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী মাহবুবা ইয়াসমিনের স্বামী নূর মোহাম্মদ মিন্টু বলেন, ‘জয়দেবপুর মৌজার দক্ষিণ ছায়াবীথিতে আমাদের ১২ কাঠা জমি রয়েছে। জমিটি আবাসিক এলাকা ঘেঁষে অবস্থিত হওয়ায় ভূমিদস্যুদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাবে এমনটি ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু এই জমির ওপরও দৃষ্টি পড়ে ভূমিদস্যু চক্রের। এই ভূমিদস্যুরা গাজীপুর শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় জমি দখলে করে থাকে।’

মিন্টু এবং শাহীনুলের অভিযোগ আশিকুর রহমান সুজন, মাসুদ রানা এরশাদ ও মেহেদী নামে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন এই চক্রটির নেতৃত্বে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও তারা বরাবরই থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

অভিযোগের বিষয়ে আশিকুর রহমান সুজন মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘ওই জায়গা আমি দখল করিনি। আমি বর্তমানে রংপুরে আছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আসলে কাগজপত্র দেখলেই প্রমাণ হবে জমির প্রকৃত মালিক কে।’ তবে অভিযোগ ওঠা বাকিদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে গাজীপুর সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মনে পড়ছে না। সামনা সামনি কাগজপত্র নিয়ে বসলে বিষয়টি নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব। কোনো ভুক্তভোগীকে অসহযোগিতা করার প্রশ্নই আসে না।

কালের আলো/বিএস/এমএম

Print Friendly, PDF & Email