সরকারি প্রকল্পে ধীর গতি-বাড়তি খরচ ঠেকাতে দ. কোরীয় পদ্ধতি চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 9:47 pm | May 12, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিলম্ব এবং বাড়তি খরচ এড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া আদান-প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন কোনো প্রকল্প শুরু করি, এটা সাধারণত ঠিক সময়ে শেষ হয় না। আমার কাছে অনেক উদাহরণ আছে, প্রকল্প তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও লেগেছে ১০ বছর।আমাদের সব প্রকল্পে বিলম্ব আর বিলম্ব এবং ব্যয় সমন্বয়ের কারণে সরকারি অর্থ অতিরিক্ত খরচ হয়।

তিনি জানান, জেনারেল পার্ক চুং-হি ক্ষমতায় আসার আগে দক্ষিণ কোরিয়াতেও এমন অবস্থা ছিল। ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন পার্ক।

ড. মোমেন বলেন, এরপরে তারা কিছু নিয়ম চালু করেছে। তার মধ্যে রয়েছে প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হবেন না। দ্বিতীয়ত, প্রকল্প ঠিক সময়ে বা সময়ের আগে শেষ হলে ওই কর্মকর্তা বেশ পদোন্নতি ও প্রণোদনা পাবেন।সবশেষে, প্রকল্প যদি ঠিক সময়ে শেষ না হয়ে বিলম্ব হয়, যেই কর্মকর্তা ওই প্রকল্প শেষের কাজে নিয়োজিত, তিনি শাস্তি পাবেন; তার পদাবনতি হবে, এমনকি জেলও খাটতে হয়।

জেনারেল পার্কের আমলের এই নিয়ম দেশটিতে যথাসময়ে প্রকল্প শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে বিশ্বে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে।আমি আমাদের দক্ষিণ কোরীয় বন্ধুদের অনুরোধ জানাই, আমাদের সঙ্গে ওই পন্থা ও প্রক্রিয়া আদান-প্রদান করুন, যাতে প্রকল্পগুলো ও ঠিকাদারি কাজ ঠিক সময়ে শেষ হতে পারে।

অনুষ্ঠানে গরিব দেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস তুলে ধরে ড. মোমেন বলেন, ‘৬০ বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়া গরিব দেশ ছিল, প্রধানত কৃষিনির্ভর। বান কি মুনের আত্মজীবনী পড়ে জেনেছি, যুদ্ধের সময়ে দক্ষিণ কোরীয়দের দুই বেলা খাবার জোটাতে কষ্ট হতো।খনিজ সম্পদে অতটা সমৃদ্ধ না হলেও সেই দেশ পাল্টে গেছে। কিছু চমৎকার কাজ তারা করেছে; সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তারা বিশ্বের বহু দেশ থেকে এগিয়ে গেছে। জাদুকরি উন্নতির দেশ হয়েছে।’

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় সহজ হওয়ার সূচকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম সারিতে রয়েছে। তারা বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও অনেক এগিয়ে।’

বৈশ্বিক এ সূচকে ১৭৬তম অবস্থান থেকে আট ধাপ এগিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের ১৬৮তম হওয়ার কথা উল্লেখ করে আরও উন্নতির জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

কালের আলো/ডিএসবি/এমএম