বাটলারের শতক-চাহালের হ্যাটট্রিকে রাজস্থানের রোমাঞ্চকর জয়

প্রকাশিতঃ 10:43 am | April 19, 2022

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

জস বাটলারের শতকে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে বিশাল জয়ের লক্ষ্য দেয় রাজস্থান রয়্যালস। জয়ের লক্ষ্যে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার এবং উমেশ যাদব। বড় লক্ষ্য তাড়ায় এই দুই ব্যাটারই কলকাতাকে ম্যাচে রেখেছিলেন।

তবে শেষ পর্যন্ত যুজবেন্দ্র চাহালের হ্যাটট্রিকে টালমাটাল হয়ে রাজস্থানের বিপক্ষে হারের তেতো স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়লো কলকাতা। যদিও জয় পেতে শেষ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে রাজস্থানকে।

মুম্বাইয়ের ব্রাবোর্ণ স্টেডিয়ামে এদিন ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন রাজস্থানের জস বাটলার। ব্যাট হাতে কলকাতার বোলারদের কচুকাটা করে তুলে নিয়েছেন চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় শতক। এই ব্যাটারের ঝড়ো শতকে ৫ উইকেটে ২১৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল রাজস্থান।

এরপর শ্রেয়াসের দৃঢ়তায় জয়ের পথে ছিল কলকাতা। তবে চাহাল হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন। তবে বোলার থেকে ব্যাটার বনে গিয়ে উমেশ যাদব আবার ম্যাচে ফেরান কলকাতাকে। ট্রেন্ট বোল্টের এক ওভার থেকে ২০ রান তুলে নেন উমেশ। শেষ ওভারে কলকাতার লাগতো ১১ রান, হাতে ছিল ২ উইকেট। সেখান থেকে দুই উইকেট হারিয়ে ৭ রানের হার দেখে কলকাতা। ২১০ রানে থামে দলটি।

ম্যাচে টসে হেরে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে দেবদূত পাডিক্কালকে নিয়ে শুরুতেই ঝড় তোলেন বাটলার। পাওয়ারপ্লেতে ৬০ রান তোলে দুই ব্যাটার। যার মধ্যে ৪৬ রানই ছিল বাটলারের। ৭ম ওভারে এসে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান পাডিক্কাল। আর সেই ওভারেই কামিন্সকে চার হাঁকিয়ে ২৯ বলে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন বাটলার।

রাজস্থানের ওপেনিং জুটি ভাঙে দলীয় ৯৭ রানে; সুনীল নারিন ২৪ রান করা পাডিক্কালকে ফেরালে। দ্বিতীয় উইকেটে যেন আরও মারমুখী হয়ে ওঠে রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামশন ও বাটলার। এই দুই ব্যাটার ৫ ওভারে ৬৫ রানের জুটি গড়ে তোলেন। ১৯ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩৮ রান করে স্যামশন ফিরলে ভাঙে জুটিটি।

অপরপ্রান্তে দুই উইকেট হারালেও বাটলার আপন ভঙ্গিতে খেলে ৫৯ বলের মাথায় কামিন্সকে মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে নিজের শতক পূর্ণ করেন। যদিও এর দুই বল পরে ৯ চার ও ৫ ছয়ে ১০৩ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ইংলিশ ব্যাটার। চলতি আসরে ৬ ইনিংসে দুই শতকে ৩৭৫ রান করে ফেলেছেন বাটলার। এই ব্যাটারের বিদায়ের পরে রানের গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে যায় রাজস্থানের।

তবে শেষদিকে শিমরন হেটমায়ারের ১৩ বলে ২৬ রানের সুবাদে দুইশ পেরোনো স্কোর দাঁড় করায় রাজস্থান রয়্যালস। কলকাতার পক্ষে নারিন ২১ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন। এই স্পিনার ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন খরুচে।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বলে নারিনকে হারায় কলকাতা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটজুটিতে অ্যারন ফিঞ্চ ও শ্রেয়াস ৯ ওভারে ১০৭ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেন। ফিঞ্চ ফেরেন ২৮ বলে ৫৮ রান করে। ফিঞ্চের বিদায়ের পর শ্রেয়াস ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। শ্রেয়াস এক প্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলে ম্যাচে রাখে কলকাতাকে।

তবে চমকের বাকি রেখেছিল চাহাল। ১৭তম ওভারে নিজের শেষ ওভারে ২ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন চাহাল। এর মধ্যে করেন হ্যাটট্রিকও। যা এই লেগস্পিনারের ক্যারিয়ারের প্রথম। আইপিএলের ২১তম হ্যাটট্রিক করে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন চাহাল। ৪০ রানে নেন ৫ উইকেট। যা আইপিএলে চাহালের ক্যারিয়ার বেস্ট।

চাহালের সেই ওভার শেষে কলকাতার প্রয়োজন ছিল ২ উইকেট হাতে রেখে ৩ ওভারে ৩৮ রান। তবে বোল্টের ওভারে ২০ রান নিয়ে ম্যাচে কলকাতাকে আবার ফিরিয়ে আনেন উমেশ। এক পর্যায়ে শেষ ওভারে ১১ রান লাগতো কলকাতার। সেখান থেকে শেষ ব্যাটার হিসেবে ৯ বলে ২১ রান করে উমেশ ফিরলে ৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কলকাতা।

কালের আলো/এমএইচ/এমআর