মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 7:18 pm | March 27, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ বিনির্মাণ করা আমাদের লক্ষ্য।

রোববার (২৭ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের হত্যাকা-ের পর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল।

এ দেশের জনগণের মুক্তি ও তাদের একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধু তাঁর সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এটি ছিল গোটা বাঙালি জাতির ওপর হামলা।

‘জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে তাঁর সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে। এ বছর গোটা জাতি জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করেছে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, তাঁর সরকার দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে এসেছে এবং প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সে দিন বেশি দূরে নয়, যখন গৃহহীন বা ভূমিহীন একজন মানুষও পাওয়া যাবে না। আমরা তাদের টিকে থাকার সুযোগ সৃষ্টি করছি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে গতি অব্যহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে বড় পরিসরে ই-লাইব্রেরি ভিত্তিক একটি পৃথক লাইব্রেরি স্থাপনের পরিকল্পনা তাঁর রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিশ্বের সকল দেশের মানুষ গবেষণার জন্য এই লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত দলিল ও তথ্য পড়তে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর বিভিন্ন প্রকাশনী, বই, ফ্লিম, শর্ট ফ্লিম, ডকুমেন্টারিসহ সমস্ত দলিল সংরক্ষণের লক্ষ্যে এগুলো ডিজিটাল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রতিটি উপজিলায় ছোট জাদুঘরসহ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কেউ যেন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধ্বংস করতে না পারে, সে লক্ষ্যেই মূলত এগুলো স্থাপন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রচার করারও পরামর্শ দেন।

সামরিক জাদুঘর, তোশাখানা জাদুঘর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্ডারগ্রাউন্ড জাদুঘর স্থাপনের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধির ইতিহাস পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে তা সংরক্ষণে সম্ভাব্য সবকিছুই করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের লক্ষ্যে তাঁর সরকারের জাতীয় গ্রন্থাগার আধুনিকায়ন এবং প্রতিটি বিভাগে প্লানেটারিয়াম ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে একটি সেল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে তিনি জাতিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে- অতীতে দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস বিবৃত করার একাধিক অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।

করোনা মহামারির মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিজের ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে এই উদযাপন পরিষদ ও জাতীয় কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব বড় পরিসরে উদযাপন করতে পারেনি। কিন্তু, ডিজিটালি অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে।

সরকারপ্রধান তাঁর দুই শিক্ষক প্রফেসর আনিসুজ্জামন ও প্রফেসর রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বেসামরিক ও সামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিক উদযাপন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/পিএম/এনএল

Print Friendly, PDF & Email