নারীর সক্ষমতাকে জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে : স্পিকার
প্রকাশিতঃ 10:48 am | December 04, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারীরা কঠিন সময়ে হাল ছেড়ে দেয় না, নারীদের এই সক্ষমতাকে জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। এর মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথ সম্প্রসারিত হবে।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর ) এফবিসিসিআই আয়োজিত ১৬ দিনব্যাপী ‘বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব’ এর ৩য় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এসব কথা বলেন।
এ সময় মুজিব শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয়ের মাসে লাল সবুজের মহোৎসব, এই আয়োজন এক্ষেত্রে সকলকে অনুপ্রাণিত করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্পিকার বলেন, বাহান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ সকল সময়েই আন্দোলন-সংগ্রাম-দুঃসময়ে নারী সমাজের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাসের সাথে নারীর অবদান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছে বাংলার নারী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকল ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে সরকার। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় নারীদের মতামতের মূল্যায়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নারীরা আজ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে যেসব নারীরা আছেন, শুধু তারাই নন, বরং তৃণমূলের নারীরাই এদেশে নারী ক্ষমতায়নের মূল কারিগর। কেননা প্রান্তিক অঞ্চলের নারীরাই ঝড়, বন্যা, নদী ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে শক্ত হাতে বারবার ঘুরে দাঁড়ায়। তারা কখনো কঠিন সময়ে হাল ছেড়ে দেয়না।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীত্বসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। সর্বোচ্চ রপ্তানিখাত তৈরি পোশাকসহ শিল্পখাতের শ্রমশক্তির অর্ধেকই নারী। এছাড়াও গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তারাই চাঙা রেখেছেন দেশের তৃণমূলের অর্থনীতিকে। তাই বাংলাদেশের আগামীর অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলোর সফল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য।’

তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের সরব অবস্থানের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় নারীদের আর্থিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নানামুখী পদক্ষেপে সংসদে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, সারা দেশে এফবিসিসিআই এর একুশটি মহিলা চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। এফবিসিসিআই সব সময় নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিয়ে আসছে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়নে প্রক্রিয়া হিসেবে সংবিধান কমিটিতে নারীদের স্থান দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের প্রচলনও করেছেন তিনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন নারী পুরুষ সম-অধিকার নিশ্চিত করা গেলে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে। নারী পুরুষের সমতা অর্জনই বাংলাদেশের আজকের সফলতার পেছনের মূল কারণ বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বল্প সময়ের দেশ শাসনে বাংলাদশ উন্নয়নের পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেছিলো। কিন্তু তাঁকে নির্মম হত্যাযজ্ঞের পর, দেশ আবার কালো অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। শত চক্রান্তের বাধা পেরিয়ে আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে ভারত পাকিস্তানকে আর্থ সামজিক অনেক সূচকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এমনকী কোভিডের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
অতিথিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে, গান ও নাচের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৬ দিনব্যাপী ‘বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব’ এর চতুর্থ দিন শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে নজরুল উৎসব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
কালের আলো/ডিএসবি/এমএম