পরমাণু যুগে প্রবেশ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 3:58 pm | October 10, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
পরমাণু যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পরমাণু যুগে প্রবেশ করে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের একের পর এক অগ্রগতি দেখে বিশ্ব এখন আমাদের প্রশংসা করছে।
‘বাংলাদেশকে যেন আর কখনো পিছিয়ে পড়তে না হয়, এ দেশের ওপর আর কখনো যেন কোনো `শকুনির থাবা’ না পড়ে, সেজন্য সরকার বাংলাদেশকে ‘উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।’
রোববার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লির উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক কাজ ১৯৯৬ সালে আমরা এগিয়ে রাখি। দুর্ভাগ্য যে, আমরা ২০০১-এ আর ক্ষমতায় আসতে পারিনি। না আসার ফলে কাজটা আমরা এগোতে পারিনি।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতার মসনদে বসে একের পর এক দুর্নীতির ফন্দি করতে থাকে। এর মধ্যে বিদ্যুৎখাত ছিল অন্যতম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করলেও বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ৩ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে আসে। যেটি বিদ্যুৎখাতের জন্য অশনিসংকেত ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, এক ফোটা বিদ্যুৎও তারা বাড়ায়নি। আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। তাই দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। বিএনপি দুর্নীতিতে বিশ্বাসী আর আমরা উন্নয়নে বিশ্বাসী। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ তার বড় প্রমাণ।
তিনি বলেন, দেশটিকে জাতির পিতা চেয়েছিলেন উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে। সেটি আমরা করবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য। দেশে একটা কিছু করতে গেলে এত সমালোচনা হয়। নানাভাবে নানাজনে বুঝে না বুঝে অনেক কথা বলে ফেলে, লিখে ফেলে। টকশোতেও অনেক কথা হয়। টক, মিষ্টি, ঝাল মিশিয়ে অনেক কথা হয়। এটাই তো বাংলাদেশের নিয়ম বা চরিত্র। কোনো একটা কিছু করতে গেলেই কেউ এটার মধ্যে খুঁত খোঁজে। তবে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু করি।
সরকার প্রধান আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ পরমাণু শক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ একটা স্থান করে নিতে পারলাম, সেটা শান্তির জন্য। বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা গ্রামে গ্রামে মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। সবার জন্য বিদ্যুৎ এটা আমাদের লক্ষ্য, এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে এখন আর পরিবেশ দূষণ হয় না। কারণ এখন সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
জাতির পিতার স্বপ্ন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আর কোনো শকুনের থাবা পড়তে দেওয়া হবে না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ড. সৈকত আকবর, প্রকল্পের ঠিকাদার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটমের অন্যতম প্রধান নির্বাহী এলেক্সে লিখাচেভ, স্থানীয় এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপিসহ রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শেষে পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য দোয়া করেন ঈশ্বরদী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোসাদ্দেকুর রহমান।
কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল