কথা বলে সেই ছবি…

প্রকাশিতঃ 11:46 am | September 28, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো :

সেই সময় সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদের রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের অপচেষ্টা চলছিল। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মাইনাস টু’র আদলে কার্যত ‘মাইনাস শেখ হাসিনা’ মিশন।

আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনা; বঙ্গোপসাগরের চেয়েও বিশাল যার হৃদয়

আওয়ামী লীগের ভাঙনের খোয়াবও দেখেছিলেন কেউ কেউ। নি:সঙ্গ কারাগারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কাটিয়েছেন ৩৩১ দিন। স্লো পয়জনিং’র মাধ্যমে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রও হয়েছিল। দেশ-বিদেশে ফুলকি ফুলকি করে জ্বলতে থাকে ক্ষোভের আগুন।

আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বের ক্রমাগত চাপ, আপসহীন মনোভাব ও অনড় দাবির মুখে মঈন উদ্দিন-ফখর উদ্দিন সরকার বাধ্য হয়েছিল শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সেই সময়টিতে অগ্রভাগেই ছিলেন এক সময়ের ঝানু কূটনীতিক, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বময় বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা, জন্মদিনে বিনম্র অভিবাদন

বাদল আকন্দের নেতৃত্বাধীন ‘শেখ হাসিনা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র ব্যানারে প্রতি সপ্তাহের আন্দোলনেই নির্ভীক চিত্তে, দূরদর্শী ভূমিকায় সরব থেকেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ওই সময়কার এই উপদেষ্টা। প্রতি মাসেই বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, গণ-অনশন কর্মসূচিও পালন করেছেন।

পদে সংস্কারপন্থীদের বাঁধার মুখে পড়েছেন। কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। রাজপথের সম্মুখে থেকে আওয়ামী লীগের ঘোর দু:সময়ে হাল ধরা ড.এ কে আব্দুল মোমেনের এমনই একটি ছবি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এই ছবিটি সংগঠক, সম্পাদক, গবেষক, অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, রাষ্ট্রদূত, প্রশাসক কিংবা অধ্যাপক-অনেক পরিচয়ে গৌরবান্বিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.মোমেনের সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের ইতিকথাকেই যেন মোটা দাগে প্রস্ফুটিত করেছে।

আরও পড়ুন: বারবার হত্যাচেষ্টা, বেঁচে গেছেন মানুষের দোয়া ও ভালোবাসায়

মাস কয়েক আগে ড. মোমেন সেনাসমর্থিত এক এগারোর অবৈধ সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন। ক্ষমতালিপ্সু কুশীলবদের জয়জয়কারের জামানায় এই মানুষটি থাকতেন বোস্টনে।

সেদিন বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য আমরা শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলন শুরু করেছিলাম। প্রতি সপ্তাহে মিটিংয়ের জন্য বোস্টন থেকে নিউইয়র্কে যেতাম। শুক্রবার ক্লাস শেষ করেই রওয়ানা দিতাম নিউইয়র্কে। রোববার সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে রাত ৪টা সাড়ে ৪টা বেজে যেত। পরদিন সোমবার সকাল ৮টায় ক্লাসে যেতাম। ছেলেমেয়েরা গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়তো।’

‘ওই সময়ে শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আমরা যখন মিটিং করতাম, সংস্কারপন্থীরাও একই সময়ে মিটিং আহ্বান করতো। যেন আমাদের মিটিং বাধাগ্রস্ত হয়।’

ড. মোমেন বলেন, ‘জেল থেকে চিকিৎসার জন্য ছাড়া পেয়ে শেখ হাসিনা বোস্টনে গিয়েছিলেন। আমরা তখন বলেছিলাম, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। তিনি সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে দেশে ফিরেছিলেন।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনের নিউইয়র্কের সেই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে -ডান থেকে মুক্তিযোদ্ধা শচিন কর্মকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাদল আকন্দ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চেীধুরী, মুক্তিযোদ্ধা রতন বডুয়া, আতাউর রহমান শামীম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, জয়নাল আবেদীন জয়, তৈয়বুর রহমান টনি এবং সভাপতি জালাল ঊদ্দিন জলিল।

কালের আলো/জিএম/এমএএএমকে