দেশে করোনায় আরও ১৬৩ জনের মৃত্যু, শনাক্তে নতুন রেকর্ড
প্রকাশিতঃ 6:42 pm | July 06, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৩৯২ জনে।
এদিকে করোনা শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ হাজার ৫২৫ জনের দেহে এই ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ৬৬ হাজার ৪০৬ জনে।
মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ হাজার ৬৩১টি নমুনা পরীক্ষায় ১১ হাজার ৫২৫ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৬জন। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৯৮ জন পুরুষ এবং ৬৫ জন নারী। নতুন মৃতদের মধ্যে ৪৬ জনই খুলনার। এছাড়া ঢাকায় ৪৫, চট্টগ্রামে ২৪, রাজশাহীতে ২৪, বরিশালে ৬, সিলেটে ২, রংপুরে ১১ এবং ময়মনসিংহে ৫ জন মারা গেছেন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের ৫ জন রয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনার মৃত্যুর মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ হাজার ৩৯২ জনে।
২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৩ জন এবং এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। এর মধ্যে গত ৩০ জুন এক দিনে রেকর্ড ৮ হাজার ৮২২ জন শনাক্ত হন। আর ১ জুলাই এক দিনে রেকর্ড ১৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২ জুলাই শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৮৩ জন ও শনাক্তের হার ছিল ২৮.২৭ শতাংশ। ১ জুলাই শনাক্তের হার ছিল ২৫.৯০ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের জারি করেছে সরকার, যা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
কালের আলো/ডিএসকে/এমএম