প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেনাবাহিনী বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে : সেনাপ্রধান

প্রকাশিতঃ 5:57 pm | April 06, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি আধুনিক, যুগোপযুগী এবং চৌকষ বাহিনী হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড. আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ দেশের এক বিশেষ অর্জন। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে এ অর্জন প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম ও অবিচল নেতৃত্বের অবদান। সেইসঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা আমাদের আরও নিরলসভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ একটি আধুনিক, যুগোপযুগী এবং চৌকষ বাহিনী হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) যশোর সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি ভবিষ্যতেও মাতৃভূমির অখণ্ডতা রক্ষা, তথা জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিটের রেজিমেন্টাল কালার দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এ উপলক্ষে যশোর সেনানিবাসে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেনাবাহিনীর ১৬ ও ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ১০ ও ১১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন এই কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে প্রধান অতিথির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহণ করে।

সেনাবাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই সাথে তিনি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের আত্নত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বহু-কাঙ্খিত স্বাধীনতা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি যে কোনও ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান এবং পবিত্র আমানত। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে এই বিরল প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে আরও অধিক গৌরবের ও আনন্দময়।

তিনি কর্মদক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাপ্ত পতাকার মর্যাদা রক্ষা এবং দেশ মাতৃকার যে কোনও প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেন।

সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলাসহ দেশের আর্থসামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতেও মাতৃভূমির অখণ্ডতা রক্ষা তথা জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি সেনাবাহিনীর সকলকে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশমাতৃকার যে কোনও প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে নির্দেশনা প্রদান করেন। কালার প্রদান উপলক্ষে একটি সুশৃঙ্খল, মনোজ্ঞ ও বর্ণিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

আইএসপিআর জানায়, যশোর সেনানিবাসের এসটিসিঅ্যান্ডএস প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত হলে ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. নুরুল আনোয়ার প্রধান অতিথিকে অভ্যর্থনা জানান। পরে প্যারেড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহাবউদ্দিনের নেতৃত্বে কালার প্যারেডে অংশগ্রহণকারী ব্যাটালিয়নগুলোর সম্মিলিত চৌকষ দল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সেনাবাহিনী প্রধানকে জেনারেল সালাম প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে উর্ধ্বতন সেনাকর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদবীর সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা, দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং বিবিধ প্রশিক্ষণ ও অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি ইউনিট বা রেজিমেন্টকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান করা হয়।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ