‘নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদন করবো, বিশ্বে মাথা উঁচু করে বাঁচবো’
প্রকাশিতঃ 2:19 pm | February 18, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিজের খাদ্যের জন্য অন্যের কাছে হাত পেতে চলতে চাই না। নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করবো। সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে বাঁচবো।’
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সকলকে নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদনের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘একটু জমিও যদি থাকে, তাতে নিজের ঘরের জন্য যা প্রয়োজনীয় সেটা চাষ করুন। তাহলে খাদ্য ঘাটতি কমবে। সকলের চেষ্টায় খাদ্যের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে।’
সুষম খাবারের বিষয়ে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে। মানুষ এখন ভাতের পাশাপাশি কিছু আমিষও কেনে। এজন্য সুষম খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। এর জন্য প্রচার বাড়াতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে যে শিশুরা কী খাবে, বৃদ্ধরা কী খাবে আর একজন গর্ভধারিণী মা কখন কী খাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ করেছি, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ করেছি, গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। ফুড গ্রেড ল্যাবরেটরি করে রফতানির প্রতিবন্ধকতা দূর করেছি। অনেকগুলো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। গবেষণার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছি। লবণাক্ত সহিঞ্চু ধান, খরা সহিঞ্চু ফল-ফসল এরকম অনেক ভালো ভালো গবেষণা হয়েছে।‘
প্রধানমন্ত্রী সুষম খাদ্য নিয়ে প্রচারের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ছোট শিশু, বয়স্ক, মাতৃত্বকালে নারীদের কী কী খেতে হবে, কীভাবে খেতে হবে সেসব বিষয়ে মানুষকে জানাতে হবে। মানুষের জীবনমান উন্নত হোক, ক্রয়ক্ষমতা বাড়ুক। একইসঙ্গে সুষম খাদ্যগ্রহণের সচেতনতাও তৈরি হোক।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা খুব ভালো যে রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট-হোটেলে খাবারের মান পরীক্ষা করে গ্রেডিং স্টিকার দেওয়া হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে। রাজধানীর পাশাপাশি পুরো দেশেই এটা হওয়া দরকার। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য যা সহযোগিতা করা দরকার করবো। এর জন্য টাকা লাগবে। অর্থমন্ত্রী আমার পাশে আছেন। সমস্যা নাই। তিনি এটা দেখবেন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য যা প্রয়োজন সব করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকাল অনলাইনে অর্ডারের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় খাবার যাচ্ছে। ফুড সাপ্লাই হচ্ছে। এটা সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা দেখা দরকার।’
খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুই পয়সা বেশি কামানোর জন্য এরা ভেজাল দিতেই থাকে। পচ-গন্ধ খাবার দিতে থাকে। খাবারের মানটা ঠিক রাখার খরচ যেটা পড়েছে সেই দামটা হয়তো রাখলো, সেই সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু ভেজাল যাতে দিতে না পারে সেটা নজরদারি করতে হবে। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে খাদ্যের মান পরীক্ষার পাশাপাশি প্রত্যেক বিভাগে এবং গ্রাম পর্যায়েও ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রফতানি করতে হলে খাবারের মান বাড়ানো ও খাদ্য পরীক্ষার ওপর জোর দিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। খাবারের পাশাপাশি কৃষিজমির গুণাগুণ ও ফসলের মান পরীক্ষার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
কালের আলো/পিএম/এনএল