দেশে ফিরেছেন সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার সুমি

প্রকাশিতঃ 12:52 pm | November 15, 2019

কালের আলো ডেস্ক:

গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে নির্যাতনের শিকার সুমি আক্তার দেশে ফিরেছেন। তিনি নির্যাতিত হয়ে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছিলেন।পরবর্তীতে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের পরিচালক ও উপসচিব মো. জহিরুল ইসলাম বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাকে গ্রহণ করেন। এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-২ এ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কেউই সুমির সাক্ষাৎ পাননি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সুমির আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে ভিআইপি টার্মিনাল দিয়ে বের করে নিয়ে আসা হয়। এরপর বোর্ডের নিজস্ব গাড়িতে করে সুমিকে তার বাড়ি পঞ্চগড়ের উদ্দেশে পাঠানো হয়। স্বামী নুরুল ইসলাম বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকলেও তার কাছে সুমিকে হস্তান্তর করা হয়নি। সুমির সঙ্গে বোর্ডের একজন পিয়ন এবং কল্যাণ ডেস্কের একজন কর্মকর্তা রয়েছেন। তাকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের পরিচালক জহিরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সুমিকে আমরা বোর্ডের গাড়ি দিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ির উদ্দেশে পাঠিয়েছি। তার সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। সেখানে ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তাকে তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

উল্লেখ্য, সুমির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বৈরাতি সেনপাড়া গ্রামে। গত ৩০ মে রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স রূপসী বাংলা ওভারসিজের মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে যান। সেখা‌নে নির্যাতনের শিকার হলে সুমি দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তার স্বামী নুরুল ইসলাম রাজধানীর পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

ভিডিও-তে সুমি বলেন, ‘ওরা আমারে মাইরা ফালাইবো, আমারে দেশে ফিরাইয়া নিয়া যান। আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। আর কিছু দিন থাকলে আমি মরে যাবো।’

থানায় জি‌ডি করার পর ২২ অক্টোবর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন নুরুল ইসলাম। কোনও উপায়ান্তর না পেয়ে সুমিকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনতে ২৭ অক্টোবর ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে আবেদন করেন তিনি। ওই আবেদনের প‌রিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাকের সহায়তায় ২৯ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। পরে জেদ্দা কনস্যুলেটের হস্তক্ষেপে সুমিকে নিয়োগ কর্তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সে দেশের পুলিশ।

শুরুতে সুমির নিয়োগ কর্তার দাবি করা ২২ হাজার সৌদি রিয়াল পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাকে ফাইনাল এক্সিট অর্থাৎ দেশে ফিরতে দেওয়া হবে না বলে জানালেও পরে নাজরান শহরের শ্রম আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।

কালের আলো/এডিবি