নৌবাহিনীকে দক্ষতার সাথে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
প্রকাশিতঃ 5:00 pm | October 02, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জাতীয় স্বার্থে সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অধিকতর দক্ষতার সাথে কাজ করতে নৌবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে এবং জেটি, যুদ্ধজাহাজ ও সমরাস্ত্র ব্যবহার করে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নির্বেঘ্নে ও সফলতার সাথে পালন করুন।
বুধবার(২ অক্টোবর) সকালে অপারেশনাল ও লজিস্টিকস কার্যক্রমে অনন্য সহায়তার স্বীকৃতিস্বরূপ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এসময় তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি খুলনাস্থ বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী তাঁকে স্বাগত জানান।
এসময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন ও ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে তার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর। নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দেশের অপার সমুদ্র-সম্পদ আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালনে ফোর্সেস গোল-২০৩০’র আলোকে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক সারফেস ফ্রিট, সাবমেরিন, নেভাল অ্যাভিয়েশন ও নৌ-কমান্ডো স্কোয়াডস। একই সঙ্গে, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভিশন-২০৪১ প্রণয়নের কাজও এগিয়ে চলেছে।

আবদুল হামিদ বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। আমাদের এই বিশাল সমুদ্র এলাকা প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় ভরপুর। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্লু-ইকোনমির বিভিন্ন সম্ভাবনা বাস্তবায়নে দেশের এই প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের মোট বাণিজ্যের ৯০ ভাগেরও বেশি সমুদ্রপথেই পরিচালিত হয়। দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। তাই, সমুদ্র সীমানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের নৌসদস্যরা বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে সার্বক্ষণিক এই সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে নৌসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এই ঘাঁটি। নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এটি। এর অধীনে পরিচালিত নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় ও নেভাল প্রভোস্ট অ্যান্ড রেগুলেটিং স্কুল নাবিকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
‘পাশাপাশি, সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্কুল অব লজিস্টিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (সোলাম)। তাছাড়া, খুলনা নৌ-অঞ্চলে অবস্থিত অন্য ঘাঁটি ও জাহাজের প্রয়োজনে সদা অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও লজিস্টিকস সহায়তা দিচ্ছে বানৌজা তিতুমীর।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধান, নৌ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নৌবাহিনীর সব নৌপ্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা।
কালের আলো/এনআর/এমএম