চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনে জ্বালানি সরবরাহ শুরু
প্রকাশিতঃ 6:37 pm | August 16, 2025

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, কালের আলো:
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েলের ডেসপাস টার্মিনাল এলাকায় এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
গত ২২ জুন পাইপলাইনটি দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয়। ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ায় মাত্র ১২ ঘণ্টায় ৫০ লাখ লিটার ডিজেল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ঢাকার গোদনাইলে নেওয়া যাবে। যেখানে আগে নৌপথে লাগতো ৪৮ ঘণ্টা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পর্যন্ত ২৪৯ দশমিক ৪২ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে গোদনাইল পর্যন্ত পাইপের ব্যাস ১৬ ইঞ্চি এবং গোদনাইল থেকে ফতুল্লায় স্থাপন করা পাইপের ব্যাস ১০ ইঞ্চি। ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন গেছে নদীর ১৮ মিটার নিচ দিয়ে। এই পাইপলাইন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৪ লাখ লিটার ডিজেল যাবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন—এই প্রকল্পটি রাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত উন্নতির সঙ্গে সম্পর্কিত। মডার্ন বিশ্বের ভিত্তি টেকনোলজিক্যাল প্রোগ্রেস। মনে রাখতে হবে, আমাদের কিন্তু খুব একটা সম্পদ নেই। কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস ছিল সেটাও এখন ফুরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, মানবসম্পদ ছাড়া আমাদের তেমন কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ আর নেই। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নতি দিয়ে আমাদের এগোতে হবে। আবার এমনিতে সম্পদ কম, যা আছে সেটারও সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না। দুটি কারণে এটা হচ্ছে, দুর্নীতি, আরেকটি অপচয়। যদি দুর্নীতি ও অপচয় কমানো যায়, টেকনোলজিক্যাল প্রগ্রেস করা যায় তাহলে বিপুল জনসংখ্যার জন্য গ্রোথ এচিভমেন্ট
সম্ভব হবে।
ফাওজুল কবির আরও বলেন, আপনি যে কোনো ইনডিকেটর নেন, আমাদের সড়ক নির্মাণ ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেশি। আরও বড় সমস্যা হচ্ছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক বিলম্ব হয়। এই প্রকল্পটিও (পাইপলাইন) ২০১৮ সালে নিয়ে ২০২০ সালে সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটলে অবশ্যই ব্যয় বাড়বে। বিশ্বব্যাপী ইকুইপমেন্টর দাম বাড়ে।
প্রকল্পটি দুরূহ হলেও সম্পন্ন করায় সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানান জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, সামনে দ্রুত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারলেই ব্যয় সাশ্রয়ী হবে। যেমন বলা হয়, এ প্রকল্পেরও তিনবার রিভিশন হয়েছে। এমন এমন প্রকল্প আছে ১৭ বছর, ১৮ বছর হয়ে গেছে। এখনও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। এ ধরনের প্রকল্প আর টেনে নেওয়া সম্ভব না। সামনের দিনে নিজস্ব ভ্যালু এডিশন বাড়াতে না পারলে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হব।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ- জামান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিপিসির পরিচালক ড. একেএম আজাদুর রহমান। এ সময় বিপিসিসহ জ্বালানি খাতের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এসএকে