সম্পদ আছে, নগদ টাকা নেই, এমন ব্যক্তির কোরবানির বিধান কী?
প্রকাশিতঃ 2:12 pm | April 26, 2025

ধর্ম ডেস্ক, কালের আলো:
সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি আদায় করা ওয়াজিব। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী—যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে; তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।
অর্থ-কড়ি, টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, গহনা-অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির অতিরিক্ত জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো- এগুলোর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া (টাকার অংকে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা)।
আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায়, তাহলেও কোরবানি করা ওয়াজিব। (আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ১৭/৪০৫)
সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি এই মহৎ ইবাদত পালন করে না, তাকে হাদিসে নিন্দা করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে, কিন্তু কোরবানি করে না—সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৩৫১৯; আত্তারগিব ওয়াত্তারহিব: ২/১৫৫)
কোনো ব্যক্তির যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে কিন্তু তার হাতে নগদ টাকা না থাকে, যেমন কোনো ব্যবসার কাজে ইনভেস্ট করেছে, অথবা কাউকে ধার দিয়েছে, কিন্তু তা উদ্ধার করতে পারেনি। তাহলে তার কোরবানীর বিধান কী?
এ বিষয়ে ফেকাহবিদদের মতামত হলো, কারো নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে কিন্তু তার কাছে নগদ টাকা নেই। এমন ব্যক্তির যদি এমন কোন সম্পদ থাকে, যা বিক্রি করে কোরবানির পশুর মূল্য সংগ্রহ করা এবং পশু ক্রয় করা সম্ভব হয়, তাহলে সেই বস্তু বিক্রি করে কোরবানী করা আবশ্যক হবে।
আর যদি এমন কোন বস্তু না থাকে, যা বিক্রি করে কোরবানী করতে পারবেন, সেই সাথে কোরবানীর দিনসমূহে কোরবানীর পশু ক্রয় পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ না করতে পারেন, তাহলে কোরবানী করা আবশ্যক হবে না।
কালের আলো/এসএকে