ইমার্জেন্সি সিঁড়ি ব্যবহারের অযোগ্য, নিষ্ক্রিয় ছিল হোস পাইপগুলো

প্রকাশিতঃ 9:24 pm | March 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রাজধানীর বনানীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এফ আর টাওয়ারে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। এছাড়া ফায়ার এস্কেপ হিসাবে একটি লোহার সিঁড়ি থাকলেও বিভিন্ন ফ্লোরে সেটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ ) এফ আর টাওয়ারের উদ্ধার কার্যক্রম শেষে ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাজাহান শিকদার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দেখা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবন থেকে বেরুনোর ফায়ার এস্কেপের সিঁড়িটি লোহার ফ্রেমের তৈরি এবং খুবই সরু।

শাজাহান শিকদার বলেন, ভবনের ভেতর অনেক অফিস এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। খোলা ল্যাপটপ, মানিব্যাগ, ডলার বা টাকাপয়সাও পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

তিনি বলেন, বিল্ডিংয়ের প্রতিটি স্থান আমরা তল্লাশি করে দেখেছি, আর কোন মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তল্লাশী করার পর, ভোর ৬টা থেকে আমরা আবার কাজ শুরু করি। নতুন করে আগুনের উৎপত্তি হওয়ার সম্ভাবনাও আর নেই।

দমকলের তল্লাশি শেষ হবার পর এফ আর টাওয়ারের দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) খন্দকার আবদুল জলিল বলেন, স্মোক ম্যানেজমেন্টের (ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ) বিষয়টা এফআর টাওয়ারসহ কোনো ভবনই ফলো করে না। নিয়ম হচ্ছে, ইমার্জেন্সি এক্সিটের সিঁড়িতে বন্ধ (ভরাট) দরজা থাকতে হবে, এটা কাঁচ বা কাঠের হতে পারে। যাতে ধোঁয়া সিঁড়িতে না যেতে পারে। কিন্তু এফআর টাওয়ারের ফায়ার ডোরটি গ্রিল দিয়ে তৈরি। ফলে সিঁড়িতে ধোঁয়া গেছে এবং এ কারণে অনেকে মারা গেছেন। এ ভবনের ইমার্জেন্সি সিঁড়ি ব্যবহারযোগ্য ছিল না।

তিনি বলেন, আগুন লাগার সময় আমরা এফআর ভবন থেকে পানি নিতে পারিনি। ভবনের হোস পাইপগুলো ইনঅ্যাক্টিভ (নিষ্ক্রিয়) ছিল, তাই পাশের ভবন থেকে পানি নিতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে আগুন লাগে এফ আর টাওয়ারে। ভবনের নবম তলায় আগুনের সূত্রপাত। পরে ছড়িয়ে পড়ে ২৩তলা ভবনের বেশ কয়েকটি তলায়। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও বিমানবাহিনীর পাঁচটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। ভবনটির ছাদে আটকেপড়া অনেককে উদ্ধার করে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণে হেলিকপ্টার থেকে ভবনটিতে পানিও ফেলা হয়।

ভয়াবহ এই আগুনে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের লাশও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত অন্তত ৭৩ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কালের আলো/এমএইচএ