আবাসিক ভবনে মাদক-দেহ ব্যবসা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় উদ্বেগ
প্রকাশিতঃ 5:51 pm | July 16, 2024

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, কালের আলো:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বন্দরের বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনে চলছে রমরমা মাদক ও দেহ ব্যবসা। ফলে এলাকার যুব সমাজে নেমে আসছে চরম অবক্ষয়। স্থানীয় লোকজনের কাছে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ ওপেন সিক্রেট হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নির্বিকার। এসব অপরাধ স্পটে পুলিশের কথিত সোর্সের নিয়মিত আনাগোনা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
এদিকে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আশুগঞ্জ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল করিম খান সাজু, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোসনা চৌধুরী, আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাহিদ আহাম্মেদ, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপিত তথ্য সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জ বন্দর এলাকার বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনে বাসা ভাড়া নিয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে মাদক ও দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ভাড়াটিয়ার ছদ্মাবরণে এক পক্ষ অপরাধ গৃহ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছে। আরেকটি দালাল গ্রুপ বাইরে থেকে মাদক ও নারী সরবরাহ এবং খদ্দের জোগাড় করার দায়িত্ব পালন করে বলে সূত্রে প্রকাশ।
এদের মধ্যে বন্দর এলাকার ফেরিঘাটে অবস্থিত বাচ্চু মিয়ার বিল্ডিংয়ে বাসির মিয়া ও তার স্ত্রী, আশুগঞ্জ বাজারের জাকির মার্কেট সংলগ্ন একটি বিল্ডিংয়ে সুমি আক্তার ও দিন্না, বেকার মার্কেট এলাকার একটি বিল্ডিংয়ে মোশারফ, আলো বাজারের একটি বিল্ডিংয়ে সুমন মিয়া, বাঁশগলি এলাকায় হুগনি বেগম ও খোদেজা বেগম এবং থানার পাশে কুতুব মিয়ার বিল্ডিংয়ে তানজিনা বেগম বাসা ভাড়া নিয়ে এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। এসব বাসায় পেশাদার পতিতাদের রাখা হয়। দালালদের মাধ্যমে বাসায় বিভিন্ন খদ্দের আনা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নারীর পাশাপাশি খদ্দেরদের কাছে বিক্রি করা হয় মাদক ও যৌন উত্তেজক পিল।
এছাড়া রেলগেইট এলাকায় শাহআলম, খালপাড় এলাকায় বকুলি বেগম ও টুক্কু মিয়া প্রকাশ্যে ইয়াবা, ফেসিডিল ও গাঁজাসহ মাদক বিক্রি করে চলছে এক প্রকার প্রকাশ্যে।
আর এসব অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত পাখি জসীমের। সোর্স জসীমের মাধ্যমে পুলিশকে ম্যানেজ করেই তারা এসব কর্মকাণ্ড করে আসছে বলে এর সাথে সম্পৃক্তদের দাবি।
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমন অপরাধচিত্র উত্থাপিত হলে দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাসহ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক ও আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাহিদ আহাম্মেদ জানান, যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ