বিএনপি-জামাত অগ্নিসন্ত্রাসের প্রবর্তক: শেখ পরশ

প্রকাশিতঃ 8:18 pm | April 18, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিএনপি ও জামাত অগ্নিসন্ত্রাসের প্রবর্তক বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

তিনি বলেছেন, সম্প্রতি আগুনের ঘটনা আমাদেরকে ব্যথিত করছে এবং জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা নাশকতার ষড়যন্ত্র কিনা সেটা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি? ফখরুল সাহেবরা ২০০৪ সালেও বলেছিল: “২১ এ আগস্ট শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিল”। এখন তিনি বলছেন, “আমরা নিজেরাই নাকি আগুন লাগিয়েছি।” আমি অবাক হই নাই তাদের এই রকম অসংলগ্ন এবং অসংবেদনশীল কথা শুনে। যে দলের নেত্রী ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন তাদের রুচি সম্বন্ধে আমার জানা আছে। জনগণ অনুমান করে যে বিএনপি দায়ী কারণ তারা যাদের সাথে শরিক করেছে জামাত তারাতো আগুন দেয়ার প্রবর্তক।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ভাসানটেক সরকারি কলেজ মাঠে (বিআরপি সংলগ্ন) পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন, ১৭ই এপ্রিল ছিল মুজিবনগর সরকার দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য দিন এই ১৭ই এপ্রিল। এই দিন মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।

‘যেখানে বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সৃষ্টি করার পেছনে এই মুজিবনগর সরকার অসাধারণ কূটনৈতিক সফলতা প্রদর্শন করেছিল। যেখানে তিনি কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছিল সেব্যাপারে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকে এবং জিয়াউর রহমান যে একজন চর এবং একজন ভ- মুক্তিযোদ্ধা সে ধারনাই এর কারণে প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জিয়াউর রহমানের পর্দার আড়ালে কুখ্যাত ভূমিকা অনুসন্ধান করে তা উন্মোচন করার আহ্বান জানাচ্ছি। সেকারণেই আমি মনে করি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালির গৌরবগাথা ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জানতে হবে।

যুবলীগ চেয়ারম্যান আরও বলেন, ৭১ সালে এই জামাত আমাদের গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সালেও এই জামাতকে সাথে নিয়ে তারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। সুতরাং তাদেরকে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।

তিনি বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে আসার তাদের কোন যোগ্যতা নাই। তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না তারা জানে। কারণ তারা গত ১৪ বছর মানুষের পাশে যায় নাই। এই যে এত বড় করোনা গেল, সারা বিশ্বে মহামারির, এই যে রমজান গেল কিন্তু জনগণের পাশে দাঁড়ায় নাই। তাই তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি মনে করে তারা নির্বাচনে না গেলে সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। আমি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। কিন্তু তাতে বৈধতার কোন সংকট হয় নাই। বরঞ্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। কোন একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বৈধতার কোন সংকট হয় না।

শেখ পরশ বলেন, বিএনপি-জামাত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এদেশের মানুষের উপর যেরকম অত্যাচার করেছেন, আওয়ামী লীগের ভোটারদেরকে চিহ্নিত করে আপনারা ঘরে ঢুকে পাকিস্তানী কায়দায় হত্যা করেছেন। যাতে এই সকল নির্যাতিত জনগণ বিচার না চাইতে পারে সেই জন্যই আপনারা বিচারালয়ে বোমাবাজি করেছেন বিচার প্রাপ্য জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য। ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনগণকে শাসন করতে চান আপনারা? আপনারা সেদিন দুইজন জজকে হত্যা করে সারা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের শাসন স্তব্ধ করে দিয়েছেন। আপনাদের অত্যাচার-নির্যাতনের বিচার যেনও এদেশের মানুষ না চাইতে পারে, সেই জন্যই আপনারা সুপরিকল্পিতভাবে এই নৈরাজ্য এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন।

‘আমি বলি বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, যারা নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানী গোয়ান্দা সংস্থা এবং এলিট শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে। সুতরাং বিএনপির রাজনীতি এদেশে নিষিদ্ধ করা উচিত বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা এ দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এদেশের মেহনতি কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা আমাদের বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জানেন, আপনারা তাঁর শক্তি। তাই তিনি বার বার আমাদের জনগণের কাছেই পাঠান। আর আমরাও আপনাদের কাছে বার বার ফিরে আসি। আপনারাই আমাদের ভরসা, আমাদের প্রধান শক্তি।

কালের আলো/বিএএ/এমএইচ