ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতে চিত্রকর্মের মাধ্যমে শিক্ষণীয় ম্যাসেজ দেওয়া হবে : মেয়র আতিক
প্রকাশিতঃ 5:38 pm | April 10, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রাজধানীর উড়ালসড়কগুলোর খুঁটিতে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
সোমবার (১০ এপ্রিল) মগবাজার উড়াল সড়কের খুঁটিতে এ দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এ গ্রাফিতি আর্ট যত্রতত্র পোস্টার বন্ধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন মেয়র।
তিনি বলেন, আমরা সিটি করপোরেশন থেকে পোস্টার-ব্যানারে ভরা অসুন্দর পিলারগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চিত্রকর্মের মাধ্যমে পিলারগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে দিচ্ছি। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর একটি শহর গড়ে তুলতে চাই।
‘পিলারগুলোতে চিত্রকর্মের মাধ্যমে শিক্ষণীয় ম্যাসেজ দেওয়া হবে। যেমন- হর্ন বাজাবেন না, পোস্টার না লাগাই, গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচাই, তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন, আসুন দেশকে ভালোবাসি।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দেশটা আমাদের, এই শহরটা আমাদের। এই দেশ, এই শহর বাইরের কারো নয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি। অথচ যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে আমরা নিজেরাই এই শহরে দৃশ্য দূষণ করছি।

আমরাই শব্দ দূষণ করছি, বায়ু দূষণ করছি। শহরের দূষণ বন্ধে আমাদের নিজেদের ঠিক হতে হবে, সচেতন হতে হবে। শুধু সরকার, সিটি করপোরেশন দায়িত্ব নিলে হবে না। সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি বলেন, শহরের উড়াল সড়কের পিলারগুলোতে তাকালে দেখা যায় যত্রতত্র পোস্টার লাগানো, অমুক ভাই সালাম নিন, তমুক ভাই এগিয়ে চলুন, ভাই আপনি নেতা হবেন, আমরা আপনার পেছনে আছি- এসব লেখা পোস্টারে ভরা। যত ধরনের তেলবাজি, পাম-পট্টি সব পোস্টারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। নিচের দিকে লিখে রাখে সৌজন্যে অমুক। অমুকদের বলতে চাই, এগুলো বন্ধ করুন। অন্যথায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব, জেল হবে, জরিমানা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রিকশায় যারা পেইন্টিং কাজ করতেন, তাদের যেন সম্পৃক্ত করি। তাই রিকশা পেইন্টিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিখ্যাত চিত্র শিল্পীদের এই গ্রাফিতি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মগবাজার ফ্লাইওভারে শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে বাকি ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেলের পিলারেও গ্রাফিতি করা হবে।
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি এলাকাবাসী, কাউন্সিলর, মুরুব্বি, শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ সবাইকে অনুরোধ করছি, আপনারা এগিয়ে আসুন। সুন্দর পিলারগুলোতে পোস্টার লাগাবেন না। শহরকে রক্ষায় আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের গ্রাফিতি কার্যক্রম রয়েছে। আমরাও কিন্তু চাইলেই পারি। সবাই সচেতন হলে আমরা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পারব।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধসের ঘটনা ঘটছে। পরিত্যক্ত মার্কেটগুলো বন্ধে কঠোর হওয়া ছাড়া আমাদের আর বিকল্প নেই। ডিএনসিসির আটটি পরিত্যক্ত মার্কেটে লাল রঙের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেব। মালিক সমিতিকে অনুরোধ করছি, আপনারা জীবনের মূল্য দিতে শিখুন। ক্রেতাদেরও অনুরোধ করছি এসব পরিত্যক্ত মার্কেট পরিহার করুন। আমরা কারওয়ান বাজার স্থানান্তরে কাজ শুরু করেছি। অন্যগুলোও স্থানান্তর অথবা নতুন মার্কেট নির্মাণ করে দেব। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে হবে।

রাজধানীর মগবাজার থেকে সাতরাস্তামুখী ফ্লাইওভারের নিচের পিলারগুলোতে ব্যানার-পোস্টার তুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাদা রঙ করা হয়েছে। ধবধবে সাদা রঙের ক্যানভাসে ফুটে উঠছে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি। তাতে শোভা পাচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতি এবং শিক্ষণীয় বিষয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আ. ন. ম. তরিকুল ইসলাম, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তার সরদার, ৮ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মিতু আক্তার, ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর নাজমুন নাহার হেলেন ও ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম প্রমুখ।
কালের আলো/কেএস/এমএম