সিরিজে সমতায় ফেরা হলো না টাইগারদের

প্রকাশিতঃ 5:48 pm | November 20, 2021

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলোঃ

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আরও বড় জয় পেল পাকিস্তান। টাইগারদের রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। সুবাদে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিশ্চিত করল বাবর আজমের দল।

শনিবার (২০ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ২ উইকেট হারিয়ে ও ১১ বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

এ ম্যাচ ছাপিয়ে অবশ্য আলোচনায় নিরাপত্তা ইস্যু। করোনাভাইরাসের মধ্যে দর্শক ফিরিয়ে বেকায়দায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ইনিংসের ১৩তম ওভারে কড়া নিরাপত্তা আর বেষ্টনী ডিঙিয়ে নর্দান গ্যালারি থেকে সোজা মাঠে ঢুকে পড়েন এক সমর্থক। সেই ওভারের প্রথম বলের পর বোলার মুস্তাফিজের পায়ের কাছে কাছে বসে ‘ভালোবাসা’ প্রকাশ করেন সেই সমর্থক। পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে মুস্তাফিজকেও মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয়।

১০৯ রানের ছোট লক্ষ্য। সেটি আরও ছোট বানিয়ে দিলেন বাংলাদেশ দলের ফিল্ডাররা। একের পর এক সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন সাইফ হাসান, তাসকিন আহমেদরা। যদিও শুরুটা ভালোই করেছিলেন বোলাররা। এদিন ১ রান করে শুরুতেই ফিরে যান পাকিস্তানের ওপেনার বাবর আজম। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। আগের ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনা পাকিস্তান দলপতি এদিনও একইভাবে আউট হন।

এরপর বেশ সাবধানে এগোতে থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামান। কিছুটা ধীর-লয়ে লক্ষ্যের দিকে ছুটেছেন সফরকারীরা। টার্গেট কম থাকলেও কিছুটা চাপ তৈরি করার চেষ্টা করেন দারুণ বল করা পেসার তাসকিন, মুস্তাফিজ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিনার শেখ মেহেদী নিজের ৪ ওভারের স্পেল শেষ করেন ২৩ রান দিয়ে।

আগের ম্যাচে যাকে বল দেওয়া নিয়ে এতো বিতর্ক সেই আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও শুরুটা ভালোই করেন। কিন্তু তার বলে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ হাস্যকর ঢঙে মিস করেন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া সাইফ হাসান। ক্যাচ মিসের সাথে বাঁচাতে পারেননি চারও, তাতেই জুটির পঞ্চাশ ছুঁয়েছে রিজওয়ান-ফখর। পরে রিজওয়ান ৩৯ রান করে আউট হলে ৮৫ রানের পার্টনারশিপ।

তার আগেই অবশ্য ব্যক্তিগত ফিফটির স্বাদ পান ফখর। তার অপরাজিত ৫০ বলে ৫৬ রানের কল্যানে ৮ উইকেট ও ১১ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দল এ ম্যাচেও ওপেনিংয়ে ভালো শুরু পায়নি। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান ফেরেন দলীয় ৫ রানে। সাইফ আগের ম্যাচে ১ রান করলেও এদিন রানের খাতা খুলতে পারলেন না। নিজের খেলা প্রথম বলেই ফেরেন শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাদে পড়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নাঈম মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে আউট হন ২ রান করে।

সেখান থেকে আবারও দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দলকে বিপদ মুক্তির ইঙ্গিত দেন এই তরুণ। তবে শাদাব খান নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ২০ রানে থাকা আফিফকে বোকা বানিয়ে ফেরান। আফিফের বিদায়ের পর পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রান তোলা বাংলাদেশ ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে তোলে ৬৪ রান। চতুর্থ উইকেটে শান্ত ও অধিনায়ক রিয়াদ ২৮ রানের জুটি গড়েন। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া রিয়াদ ১২ রান করে হারিস রউফের বলে আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

আগের ম্যাচে ব্যর্থ শান্ত এদিন লড়াই করেন পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে, হাঁটছিলেন ফিফটির পথে। তবে মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেননি। লেগ স্পিনার শাদাবের বলে ফিরতি ক্যাচ দেন। তার ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪০ রান। দুই সেট ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আবার বড় রানের স্বপ্নে ভাটা পড়ে স্বাগতিক শিবিরের। গত ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শেখ মেহেদী হাসান সুবিধা করতে পারেননি আজ। ফেরেন ৮ বলে ৩ রান করে।

পরে নুরুল হাসান সোহানের ১১ রানের সঙ্গে শেষদিকে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব অপরাজিত ৭ রানের কল্যানে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দল ১০৮ রানের পুঁজি পায়। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও শাদাব খান।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল