তিস্তা বাঁধের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
প্রকাশিতঃ 8:25 pm | October 20, 2021

কালের আলো সংবাদদাতা, কালের আলো:
তিস্তা বাঁধের গজলডোবা অংশের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দিয়েছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বছরের এই সময়ে হঠাৎ করে এমন পানি বৃদ্ধি বা বন্যার আশংকা অস্বাভাবিক ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এতে প্লাবিত হয়েছে লালমনিরহাট, নীলফামারির বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিচু এলাকা। কুড়িগ্রামেও তিস্তার পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
বছরের এই সময়ে হঠাৎ করে এমন পানি বৃদ্ধি বা বন্যার আশঙ্কা অস্বাভাবিক ঘটনা। অথচ, লালমনিরহাটের তিন উপজেলার অনেক গ্রাম, বিশেষ করে তিস্তার চরএলাকা এখন প্লাবিত। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, উঠতি আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে।
বুধবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ঠ তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উজানে ভারতের অংশে ভারত সরকার বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা নদীর এক তরফা ভাবে ব্যবহার করছে। ফলে শুষ্কু মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে কোনো পানি থাকে না। মরুভূমিতে পরিণত হয় তিস্তা। আবার বর্ষাকালে অতিবর্ষণের ফলে ভারতের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলাসহ নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা।
চলতি বর্ষা মৌসুমেও কয়েক দফায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরে পানি কমতে থাকে তিস্তায়। বর্ষা শেষ না হতেই আবারও পানি শূন্য হতে থাকে তিস্তা নদী। প্রায় শূন্যের কোটায় যাওয়া তিস্তা গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে কার্তিক মাসেও ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা নদী। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে তিস্তার উভয় তীর উপচিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে গেছে চাষিদের স্বপ্নের ফসল। পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ব্যারেজ রক্ষার্থে সব জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘সকালবেলায় আমি খবর পাই, ফ্ল্যাট বাইপাসের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তখন আমি মাইকিং করার জন্য বলে দিই। যাতে লোকজন নিরাপদে দূরে সরে যায়। এবং রেড অ্যালার্ট জারি করতে বলি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারীর ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউ-দৌলা বিবিসিকে বলেন, তিস্তার পানি এখন ৭০ সেন্টিমিটারের বেশি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার ডাউয়াবাড়ি, সিন্দুর্ণা ও গড্ডিমারীসহ জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের তিস্তাতীরে নিচু এলাকা প্লাবিত।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, নীলফামারী, কুড়িগ্রামেও। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনও।
কালের আলো/ডিএসবি/এমএম