পীরগঞ্জের ঘটনা পরিকল্পিত, অংশ নেয় বহিরাগতরাও : স্পিকার

প্রকাশিতঃ 4:31 pm | October 19, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে পরিকল্পিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, আমরা স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, হামলার সময় বাইরে থেকে অনেক বহিরাগত ছিল। যাদের চেহারা এলাকার লোকজন চিনতে পারেনি। বহিরাগতদের অনেকের কাছে পেট্রল ছিল। অবশ্যই এটা পরিকল্পিত ঘটনা। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা নয়। পীরগঞ্জে এ ধরনের অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড় করিমপুর কসবা গ্রামের উত্তরপাড়া পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এবার পূজাতেও পীরগঞ্জের ৯৮টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপিত হয়েছে। সেখানে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত, উপেজলা প্রশাসন ও দলের সহায়তা ছিল। ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় পূজার সময়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু পূজা শেষে হঠাৎ এ ধরনের নাশকতামূলক ঘটনা কীভাবে ঘটল, এটার গোড়ায় আমাদের যেতে হবে।

সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত অপরাধীদের গোড়া বের করা সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন, রামনাথপুরের মাঝিপাড়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর খবর আমরা পাওয়ার আগে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পেয়েছিল। পীরগঞ্জ থানার ওসি তার ফোর্স নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। মাঝিপাড়াকে তারা সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেছেন। তারা ফোর্স দিয়ে মাঝিপাড়াকে ঘিরে রেখেছিলেন, যাতে সেখানে কোনো ধরনের আক্রমণ না হতে পারে।

‘এর মধ্যে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারও সেখানে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে মাঝিপাড়ায় আক্রমণ না করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতরা বড় করিমপুরে তারা কিছু কিছু বাড়িতে বিচ্ছিন্নভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। তখন সেখানে পুলিশের ফোর্স টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।’

স্পিকার বলেন, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভায়। তারপরও ২৮টি বাড়ি পুড়ে গেছে। কিছু গবাদিপশু পুড়ে গেছে এবং অনেকের বাড়িঘর ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক, নাশকতামূলক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং প্রশাসন একটা সুষ্ঠু তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করবে।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তৎক্ষণাৎ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। চাল, ডাল একটি করে শাড়িসহ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের পুনর্বাসনে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘরবাড়ি নির্মাণ, অর্থ প্রদান, ব্যবসায়ীদের পুনরায় ব্যবসা করতে সহযোগিতা ও মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছেন।

এ সময় রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রনিসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/ডিএসবি/এমএম